দেশজুড়ে

শুরু হলো বাউল শাহ আব্দুল করিম লোক উৎসব

আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম, কে হিন্দু কে মুসলমানসহ শতাধিক গান গেয়েছেন বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম। তারই জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ২০০৬ সাল থেকে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার উজানধল গ্রামবাসীর উদ্যোগে শুরু হয় বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম লোক উৎসব। অনেক সময় ব্যক্তি উদ্যোগে আবার কখনো বড় কোনো প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় আয়োজিত হয় এই লোক উৎসবটি। তারই ধারাবাহিকতায় এবারও বাউল শাহ আব্দুল করিমের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী শুরু হয়েছে বাউল শাহ আব্দুল করিম লোক উৎসব। লোকউৎসব উপলক্ষে বসেছে মেলাও। সানোয়ারা ড্রিংক্স অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজের কোয়ালিটি আইসক্রিমের আয়োজনে এবারের উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

Advertisement

একুশে পদক পাওয়া বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের জীবনদশা থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে সুনামগঞ্জ ছাড়াও বিভিন্ন জেলা থেকে আসেন হাজারো মানুষ। শাহ আব্দুল করিম গানের মাধ্যমে কথা বলেছেন দেশ, অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং দারিদ্রতার। জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত অভাব অনটনের মাধ্যমে পার করা এই সাধককে সর্বোচ্চ সম্মাননা দেয়ার দাবি তুলেছেন অনেকে। তাছাড়া শাহ আব্দুল করিমের গান বিনা অনুমতিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিকৃত করে প্রচার করায় সেটারও প্রতিবাদ করেছেন তার একমাত্র সন্তান বাউল শিল্পী শাহ নুর জালাল।

শুক্রবার বিকেলে দিরাই উপজেলার শাহ আব্দুল করিমের বাড়ি উজানধলে স্থানীয় একটি মাঠে উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। শাহ আব্দুল করিমের সন্তান শাহ নুর জালালের সভাপতিত্বে ও সাংস্কৃতিক কর্মী জয়ন্ত কুমার সরকারের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পিকেএসএফের চেয়ারম্যান স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্ত ড. খালিকুজ্জামান। সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পী সুষমা দাশ, পিকেএসএফের উপব্যবস্থাপক ড. মো. জসিম উদ্দিন, টিএমএসএসের উপনির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুল কাদের, সানোয়ারা ড্রিংক্স ও বেভারেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবুর রহমান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. জাহেদা আহমদ প্রমুখ।

বাউল সম্রাটের গান বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অনুমতি না নিয়ে বিকৃতি করার প্রতিবাদ জানিয়ে ছেলে শাহ নুর জালাল বলেন, খুব কষ্ট লাগে যখন দেখি বাবার গানের বিকৃতি ঘটে। আমি সেটা বিবেচনা করে ২০১০ সালে শাহ আব্দুল করিম রচনাসংগ্রহ কপি রাইট করিয়েছি। যারা শাহ আব্দুল করিমের গান মঞ্চে গাচ্ছেন আমার আপত্তি নেই কিন্তু যারা বাণিজ্য করছেন তারা কিন্তু আমাকে কিছুই জিজ্ঞেস করছেন না। আগামীতে চেষ্টা করবো আমি যেন আমার ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত না হই। আমার অনুরোধ বাবার কোনো গান গাওয়ার আগে একবার আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে নিবেন।

Advertisement

মোসাইদ রাহাত/এফএ/এমকেএইচ