গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসেই দরপতন হয়েছে শেয়ারবাজারে। এতে তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। এক সপ্তাহেই বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করা অর্থের পরিমাণ ১৬ হাজার কোটি টাকার ওপরে কমে গেছে।
Advertisement
বিনিয়োগ করা অর্থের পরিমাণ কমার পাশাপাশি সপ্তাহজুড়ে কমেছে সবকটি মূল্য সূচক ও লেনদেনের পরিমাণ। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্য সূচক কমেছে ৫ শতাংশের ওপরে। লেনদেন কমেছে প্রায় ৩২ শতাংশ।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৬৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৮০টির। ১২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৪২ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল তিন লাখ ৫৯ হাজার ২৬২ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১৬ হাজার ২৭৯ কোটি টাকা।
এদিকে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২৫২ দশমিক ৯২ পয়েন্ট বা ৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১৬৮ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
Advertisement
বাকি দুটি সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক কমেছে ৪৪ দশমিক ৯০ পয়েন্ট বা ৪ দশমিক ১২ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৪৩ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট বা ৪ দশমিক ২১ শতাংশ।
ডিএসই-৩০ আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে ১০০ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট বা ৬ দশমিক ৩১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৫৬ দশমিক ১৭ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
সবকটি সূচকের এমন পতনের মধ্যে ডিএসইতে লেনদেনের গতিও কমেছে। দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ ৯০০ কোটি টাকার ঘর থেকে ৬০০ কোটিতে নেমে এসেছে। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৬১৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৯০৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ২৮৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা বা ৩১ দশমিক ৭২ শতাংশ।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে তিন হাজার ৮৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় চার হাজার ৫২১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে এক হাজার ৪৩৪ কোটি ২৯ লাখ টাকা বা ৩১ দশমিক ৭২ শতাংশ।
Advertisement
গত সপ্তাহের মোট লেনদেনের মধ্যে ‘এ’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের অবদান দাঁড়িয়েছে ৮৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ। এছাড়া ডিএসইর মোট লেনদেনে ‘বি’ গ্রুপের অবদান ১৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। ‘জেড’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের অবদান দশমিক ৬১ শতাংশ এবং ‘এন’ গ্রুপের অবদান ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে গ্রামীণফোনের শেয়ার। কোম্পানিটির ১১৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা সপ্তাহজুড়ে হওয়া মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভিএফএস থ্রেড ডাইংয়ের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯০ কোটি ৬৭ লাখ টাকার, যা সপ্তাহের মোট লেনদেনের ২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। ৭৬ কোটি ৩২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ফার্মা।
লেনদেনে এরপর রয়েছে- ব্র্যাক ব্যাংক, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যাল, ওরিয়ন ইনফিউশন, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, কনফিডেন্স সিমেন্ট, গোল্ডেন হার্ভেস্ট এবং এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
এমএএস/এমএআর/জেআইএম