সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিব প্রদেশে তুর্কি সেনাদের ওপর সরকারি বাহিনীর বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ জন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় হাতই প্রদেশের গভর্নর রামি দোগান। বৃহস্পতিবারের এ হামলায় আরও অনেক সেনা আহত হয়েছেন, ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
Advertisement
সম্প্রতি ইদলিবে কয়েক হাজার সেনা মোতায়েনের পর থেকে এটাই একদিনে তুর্কি বাহিনীর সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা। এর জবাবে সিরীয় স্থাপনাগুলোতে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে তুর্কি সেনাবাহিনী।
এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। প্রতি ঘণ্টায় ঝুঁকি বাড়ছে মন্তব্য করে তিনি দু’পক্ষকেই দ্রুত সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
ন্যাটো-মিত্র তুর্কি সেনাদের ওপর হামলায় উদ্বেগ জানিয়েছে মার্কিন প্রশাসনও। এমন পরিস্থিতিতে তুরস্কের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে তারা। এছাড়া তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টোলটেনবার্গের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে।
Advertisement
এর আগে, হাতই গভর্নর রামি দোগান বৃহস্পতিবারের হামলায় ২২ সেনার মৃত্যুর কথা জানিয়েছিলেন। এর পরপরই জরুরি বৈঠক ডাকেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। দেশটির রাজধানী আঙ্কারায় প্রেসিডেন্ট কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে মন্ত্রী ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ইদলিব প্রদেশে অন্তত ৩০ লাখ মানুষের বসবাস। গত ডিসেম্বরের পর থেকে সামরিক বিমান হামলা ও স্থল অভিযানের প্রেক্ষিতে সেখানকার অন্তত ১০ লাখ মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন, এর মধ্যে প্রায় অর্ধেকই শিশু।
ইতোমধ্যেই সিরিয়া ছেড়ে অন্তত ৩৬ লাখ শরণার্থী তুরস্কে আশ্রয় নিয়েছে। সবশেষ সংঘাতের কারণে আরও বিপুল সংখ্যক মানুষ ইদলিব ছাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এসব শরণার্থীর ইউরোপ পৌঁছানোর সুবিধার্থে সীমান্ত খুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে তুরস্ক।
রাশিয়ার সমর্থনে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইদলিব এবং আলেপ্পোতে সামরিক অভিযান শুরু করেছে সিরিয়ার সামরিক বাহিনী। এই অভিযানের মুখে অঞ্চলগুলোতে মানবিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ বলছে, ইদলিব-আলেপ্পোর এই সহিংসতায় গত কয়েক সপ্তাহে শত শত বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আর বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন প্রায় সাত লাখ মানুষ।
Advertisement
গত মাসে ইদলিবে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর হামলায় তুরস্কের অন্তত ১৩ সেনার প্রাণহানি ঘটে। এ ঘটনার পর আঙ্কারা সশস্ত্র জবাব দেয়ার প্রস্তুতি নেয়। ফলে নয় বছরের যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় নতুন করে সহিংসতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সূত্র: আলজাজিরা
কেএএ/এমএস