করোনাভাইরাস ঠেকাতে সৌদি আরব প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার কারণে ভিসা হওয়া পরও উমরাহ করতে পারছে না বাংলাদেশের প্রায় ১০ হাজার ওমরাহ যাত্রী। সৌদির আকস্মিক এমন সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের ৫০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। তাই দেশটির এমন হুটহাট সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ভিসা ফি’র টাকা ফেরত চাইবে হজ এজেন্টরা।
Advertisement
হজ এজেন্সিগুলো জানিয়েছে, প্রথমেই ক্রয়কৃত বিমানের টিকিটের টাকা ফেরত চাওয়া হবে। পাশাপাশি সৌদি হোটেল এবং উমরাহ ভিসা ফির টাকা ফেরত চাওয়া হবে। এজন্য কূটনীতিক তৎপরতা জোরদার করতে হবে। তা না হলে সবাইকে লোকসানের মুখে পড়তে হবে।
হজ এজেন্সির সংগঠন-হাবের সভাপতি এম শাহাদত হোসাইন তসলিম জাগো নিউজকে বলেন, আমরা প্রথমেই এয়ারলাইন্সের কাছে যতটুকু সম্ভব টাকা ফেরতের আবেদন করবো। এরপর সৌদি সরকারকে কূটনীতিক চ্যানেলে ভিসা ফির বিষয়টি জানানো হবে। হোটেল ও বাড়ি ভাড়ার টাকা ফেরত পাওয়া যাবে কিনা তা নিশ্চিত নয়। তবে উমরাহ যাত্রী ও হজ এজেন্সি টিকিয়ে রাখতে আমরা সেটির চেষ্টাও করবো।
বাংলাদেশ থেকে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সৌদি এয়ারলাইন্স, এমিরেটস এয়ারলাইন্স, কাতার এয়ারলাইন্স, গালফ এয়ার, কুয়েত এয়ারলাইন্স, ওমান এয়ারলাইন্স উমরাহ যাত্রী বহন করে। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ ও সৌদি এয়ারলাইন্স সরাসরি ফ্লাইটে সৌদিতে যাত্রী নেয়। বাকিরা নিজ নিজ দেশে ট্রানজিটের মাধ্যমে যাত্রী বহন করে।
Advertisement
এয়ারলাইন্স সূত্রে জানা গেছে, উমরাহ যাত্রীর ক্ষেত্রে সাধারণত গ্রুপ টিকিট নেয়া হয়। এসব টিকিটের মূল্য স্বাভাবিকের চেয়ে কমে পাওয়া যায়। তাই সেগুলো ফেরত দিলে কত শতাংশ টাকা ফেরত পাওয়া যাবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এছাড়া যাদের ফ্লাইট আগামী তিনদিনের মধ্যে তাদের খুব অল্প টাকা (সর্বোচ্চ ৮-১০ হাজার) এবং ট্রাভেল ট্যাক্সের অংক ফেরত পাবেন। আর যাদের ফ্লাইট সপ্তাহখানেক পর তারা কিছু টাকা বেশি পাবেন।
তবে হজ এজেন্সি বলছে, উমরাহ যাত্রীদের জন্য বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের প্রোমোশনের অর্থাৎ নন-রিফান্ডের (অফেরতযোগ্য) টিকিট কেনা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে অনেকেরই কোনো টাকা ফেরত না পাওয়ার আশংকা রয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে যাত্রীদের টিকিটের টাকা ফেরতের ঘোষণা দিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
প্রতিষ্ঠানটির উপ-মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার বলেন, ‘সৌদি আরব সরকার ওমরাহ ও ভিজিট ভিসায় সৌদি আরবে গমনে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সে কারণে সৌদি আরবে ভিজিট/ওমরাহ ভিসায় গমনকারীরা অপাততঃ ভ্রমণ করতে পারবেন না। এসব ভিসাধারী যাত্রী যারা বাংলাদেশ বিমানের টিকিট ক্রয় করেছেন তারা চাইলে রিফান্ড নিতে পারবেন অথবা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর সিট খালি থাকলে সে সব ফ্লাইটে পুনরায় আসন বরাদ্দ দেয়া হবে।’
Advertisement
হোটেলের টাকা ফেরতের বিষয়ে এজেন্সিগুলো বলছে, হজের বিভিন্ন প্যাকেজের মধ্যে বিভিন্ন তারকা হোটেল রয়েছে। আবার কোনো প্যাকেজে হাজিদের বাড়ি ভাড়া করে রাখা হয়। আমরা হজের প্যাকেজ বিক্রির পরপরই হোটেল কনফার্ম করি। হোটেল বুকিং কনফার্ম দিয়েই উমরাহ ভিসার আবেদন করা হয়। গুটি কয়েক হোটেল ছাড়া অন্যান্য হোটেলের টাকা ফেরত নাও পাওয়া যেতে পারে।
উল্লেখ্য, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ভয়ে ওমরাহ যাত্রী ও মসজিদে নববী ভ্রমণকারীদের জন্য সৌদি প্রবেশ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।
এআর/এএইচ/এমএস