ভারতের রাজধানী দিল্লিতে বিক্ষোভ ও সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত রোববার বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) বিরোধী ও সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে। খবর এনডিটিভির।
Advertisement
সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। পুণরায় শান্তি ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। এদিকে, তার সফরের পর বুধবার রাতেই ভজনপুর, মৌজপুর এবং কারাওয়াল নগরে নতুন করে অগ্নিসংযোগ ও অশান্তির ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে, সহিংসতার ঘটনার তিনদিন পর এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি সহিংসপূর্ণ এলাকায় শান্তি ও ভ্রাতৃত্ববোধের আহ্বান জানিয়েছেন। অপরদিকে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
শনিবার থেকেই জাফরাবাদেই সিএএ-বিরোধীরা রাস্তা অবরোধ করে। রোববার থেকে পাল্টা সিএএর পক্ষে সমাবেশ শুরু হয়। এরপরেই দু'পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষ শুরু হয়।
Advertisement
উত্তরপ্রদেশ সংলগ্ন জোহরাপুরীতে পুলিশের সঙ্গেও দুষ্কৃতীদের সংঘর্ষ হয়েছে। বিক্ষোভ-সংঘাতে আহতদের অনেকেই মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৪৬ জনের শরীরে বুলেটের ক্ষত মিলেছে। শুধু তাই নয়, বেশ কয়েকজন অ্যাসিড হামলায়ও দগ্ধ হয়েছে। সেখানে গোলাগুলির পাশাপাশি অ্যাসিড হামলাও চালানো হয়েছে।
এই ঘটনা উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে। মুস্তাফাবাদ থেকে বেশ কয়েকজনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। ভারতীয় একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এদের অনেকেরই চোখে অ্যাসিড ঢালা হয়েছে। দৃষ্টি হারিয়েছেন চারজন। খুরশিদ নামে একজনের দু’চোখই নষ্ট হয়ে গেছে। তেগ বাহাদুর হাসপাতাল থেকে লোকনায়ক জয়প্রকাশ হাসপাতালে আসার জন্য অ্যাম্বুল্যান্সও পাননি তিনি। দুই চোখসহ পুরো মুখ ঝলসে গেছে তার।
জাফরাবাদ-মৌজপুর এখন কিছুটা শান্ত। ফাঁকা রাস্তাজুড়ে পাথর, ইট, ভাঙা-কাঁচ, লোহার রড পড়ে আছে। ভেতরের গলি থেকে এখনও কালো ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। মৌজপুরের গলির একটি দোকানে এখনও আগুন নেভেনি। দোকানের মালিক মুসলিম হওয়ায় সেখানে আগুন লাগানো হয়েছে।
জাফরাবাদের এক বাসিন্দা বলেন, ভেতরের মহল্লায় অশান্তি চলছে। কোথায় কতজনের দেহ পড়ে আছে কেউ জানে না। পুলিশ এখনও ঢুকতে পারেনি সেখানে।
Advertisement
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ১৮টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে এবং ১০৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিহতদের পরিবারকে দু'লাখ টাকা ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। গত দু’দিন যেসব এলাকায় অশান্তি হয়েছিল, সেখানে পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে শান্ত রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
টিটিএন/পিআর