দেশজুড়ে

নারী কেলেঙ্কারিতে দুই আইনজীবীকে বহিষ্কার

নৈতিক স্খলনের দায়ে হবিগঞ্জের সাবেক সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটরসহ (এপিপি) দুই আইনজীবীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় জেলা আইনজীবী সমিতির এক বিশেষ সভায় তাদের দুই বছরের জন্য বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

Advertisement

বহিষ্কৃতরা হলেন- সাবেক সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট আবুল কালাম ও অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের আজাদ।

জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল হাসান শরীফ জানান, সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ ও অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের আজাদের বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।

জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. বদরু মিয়া জানান, অভিযুক্ত দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে। প্রাথমিকভাবে তা প্রমাণিত হয়েছে। সংগঠনের সদস্য হয়ে সংগঠনের ভাবমূর্তি নষ্ট করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে বহিষ্কার করা হয়েছে।

Advertisement

আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. বদরু মিয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল হাসান শরীফের পরিচালনায় সভায় বক্তারা বলেন, বহিষ্কৃত দুই আইনজীবীর অসামাজিক কর্মকাণ্ডে সমিতির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। প্রথমে তাদের সংগঠন থেকে শোকজ করা হয়। শোকজের সন্তোষজনক জবাব না দেয়ায় গঠনতন্ত্র মোতাবেক তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ জানুয়ারি দুপুরে বোরকা পরা এক নারীকে নিয়ে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের তৃতীয় তলার একটি রুমে একান্ত সময় কাটান এপিপি আবুল কালাম। এ বিষয়টি কোর্ট পুলিশের নজরে এলে তারা বিষয়টি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে জানান। খবর পেয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. নুরুল হুদা চৌধুরী ঘটনাস্থলে আসার আগেই আবুল কালাম ওই নারীকে রিকশায় তুলে দেন। বিচারক এ বিষয়ে আবুল কালামকে জ্ঞিজাসা করলে ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে তিনি অশোভন আচরণ করেন। এ সময় মোটরসাইকেলযোগে অ্যাডভোকেট আবুল কালাম দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট বিষয়টি সদর মডেল থানা পুলিশে জানান। পুলিশ ওইদিন রাত ১০টায় শহরের মোহনপুর এলাকা থেকে অ্যাডভোকেট আবুল কালামকে আটক করে।

অপরদিকে অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের আজাদ ওরফে উজ্জল শহরতলীর জালালাবাদ-নোয়াগাঁও এলাকার বাসিন্দা। তিনি হবিগঞ্জ বৃন্দাবন সরকারি কলেজের এক ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ওই সম্পর্কের সূত্র ধরে মেয়েটিকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ধর্ষণ করেন আবুল খায়ের আজাদ। পরবর্তীতে বিয়ে না করায় মেয়েটি তার বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। এতে সমিতির ভাবমূর্তি ও গৌরবহানি করার জন্য তাদেরকে গঠনতন্ত্র মোতাবেক বহিষ্কার করা হয়েছে।

অপরদিকে ঘটনার পর নৈতিক স্খলনের অপরাধে অ্যাডভোকেট আবুল কালামকে গোপায়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি দেয় সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ।

Advertisement

সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/আরএআর/এমএস