‘আমরা তদন্ত শুরু করেছি ও প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছি। বিস্তারিত জেনে তদন্তের পর দোষী প্রমাণিত হলে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’- জাতীয় দলের ক্রিকেটার সৌম্য সরকারের বিয়ের আশীর্বাদের ছবি দেখে বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ইউনিটের পরিচালক এসএম জহির উদ্দিন আকন এ মন্তব্য করেন।
Advertisement
জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘ছবিতেই প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। এখন যদি তারা এ চামড়া রাখার পক্ষে কোনো লাইন্সেন্স দেখাতে পারে, তবে সেটা বৈধ নয়তো এটা অবৈধ। অবৈধ্য হলে শাস্তি পেতে হবে।’
গত ২১ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরা শহরের মধ্যকাটিয়া এলাকার বাড়িতে সৌম্য সরকারের বিয়ের আশীর্বাদ অনুষ্ঠিত হয়। ওই অনুষ্ঠানে আসন হিসেবে ব্যবহার করা হয় একটি হরিণের চামড়া। যার ওপর দাঁড়িয়ে ও বসে আশীর্বাদের সার্বিক কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। আগামীকাল (বুধবার) হবে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা।
তার আগে আশীর্বাদের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় সমালোচনা। যদিও সৌম্য সরকারের পরিবারের পক্ষ থেকে এটিকে পারিবারিক ঐহিত্য হিসেবে বলা হচ্ছে।
Advertisement
চামড়াটি হরিণের স্বীকার করে সৌম্য সরকারের বাবা কিশোরী মোহন সরকার বলেন, ‘হরিণের চামড়াটি সৌম্যর দাদার কাছ থেকে পাওয়া। সেখান থেকে আমাদের বাসায় রয়েছে পারিবারিক ঐতিহ্য হিসেবে। সৌম্যের আশীর্বাদের আসন হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে চামড়াটি।’
বন্যপ্রাণীর চামড়া রাখার পক্ষে কোন লাইসেন্স রয়েছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এখন ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলবো।’
বন্যপ্রাণী রক্ষায় কাজ করে সেভ ওয়াইল্ড লাইফ। বন্যপ্রাণীর কোনো অংশবিশেষ রাখার জন্যও তাদের মাধ্যমে লাইসেন্স নিতে হয়।
খুলনার সেভ ওয়াইল্ড লাইফের বন কর্মকর্তা মদিনুল আহসান বলেন, ‘হরিণের চামড়া রাখার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা বিস্তারিত খোঁজখবর নিচ্ছি।’
Advertisement
উল্লেখ্য, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের ধারা ৬ অনুযায়ী, লাইসেন্স ও পারমিটপ্রাপ্ত ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কারো কাছে কোনো বন্যপ্রাণী, বন্যপ্রাণীর অংশ পাওয়া যায় অথবা তা থেকে উৎপন্ন দ্রব্য ক্রয়, বিক্রয়, আমদানি-রপ্তানি করেন, আর যদি অপরাধ প্রমাণিত হয় তাহলে সর্বোচ্চ এক বছরের সাজা অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা হতে পারে। একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটলে তিন বছরের সাজা অথবা সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।
আকরামুল ইসলাম/এসএএস/জেআইএম