অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া শামীমা নূর পাপিয়া ও সুমন দম্পতির ফার্মগেটের বাসা থেকে এবার জব্দ করা হয়েছে বিদেশি অস্ত্র-গুলি ও ম্যাগজিন। শুধু তাই নয়, জব্দ করা হয়েছে বিদেশি মদ ও বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ।
Advertisement
রোববার দুপুরে র্যাব সদর দফতর থেকে পাঠানো এক ক্ষুদে বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
এ ব্যাপারে র্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল সারওয়ার-বিন-কাশেম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, রোববার বিকেল ৪টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।
গতকাল শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে দেশত্যাগের সময় পাপিয়াসহ চারজনকে গ্রেফতার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। আটক বাকিরা হলেন- পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন (৩৮), সাব্বির খন্দকার (২৯) ও শেখ তায়্যিবা (২২)।
Advertisement
এ সময় তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, নগদ ২ লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ জাল টাকা, ১১ হাজার ৯১ ইউএস ডলারসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা জব্দ করা হয়।
ওইদিন সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল জানান, সমাজসেবার আড়ালে অসহায় সুন্দরী নারীদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক ব্যবসা করে আসছিলেন শামীমা নূর পাপিয়া।
বৈধ আয় অনুযায়ী পাপিয়ার বার্ষিক আয় মাত্র ১৯ লাখ টাকা। অথচ রাজধানীর অভিজাত একটি হোটেলে শুধু গত তিন মাসে তিনি বিল পরিশোধ করেছেন প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। নারী-সংক্রান্ত অপকর্ম ছাড়াও অস্ত্র-মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন তদবির বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত পাপিয়া।
শাফী উল্লাহ বুলবুল বলেন, আটক পাপিয়ার তেজগাঁও এফডিসি গেট সংলগ্ন এলাকায় অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে একটি গাড়ির শোরুম এবং নরসিংদীতে একটি গাড়ি সার্ভিসিং সেন্টার রয়েছে। এসব ব্যবসার আড়ালে তিনি অবৈধ অস্ত্র, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, পাপিয়া সমাজসেবার নামে নরসিংদী এলাকায় অসহায় নারীদের আর্থিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাদের অনৈতিক কাজে লিপ্ত করতেন। এজন্য অধিকাংশ সময় নরসিংদী ও রাজধানীর বিভিন্ন বিলাসবহুল হোটেলে অবস্থান করে অনৈতিক কাজে নারী সরবরাহ করে আসছিলেন।
পাপিয়া গত তিন মাসে রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা বিল পরিশোধ করেছেন জানিয়ে শাফী উল্লাহ বুলবুল বলেন, ওই হোটেলে প্রতিদিন শুধু বারের খরচ বাবদ প্রায় আড়াই লাখ টাকা পরিশোধ করতেন পাপিয়া। সেখানে তার নিয়ন্ত্রণে ৭টি মেয়ের কথা জানা গেছে, যাদের তিনি প্রতি মাসে ৩০ হাজার করে মোট ২ লাখ ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করতেন।
এছাড়া নরসিংদী এলাকায় চাঁদাবাজির জন্য তার একটি ক্যাডার বাহিনী রয়েছে। স্বামীর সহযোগিতায় অবৈধ অস্ত্র, মাদক ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে স্বল্প সময়ের মধ্যে তিনি নরসিংদী ও ঢাকায় একাধিক বিলাসবহুল বাড়ি-গাড়িসহ বিপুল পরিমাণ অর্থের মালিক হয়েছেন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন ধরনের তদবির বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। তবে এ বিষয়ে এখনও বিস্তারিত জানার সুযোগ হয়নি বলে জানায় র্যাব।
সমাজসেবার আড়ালে অনৈতিক ব্যবসায় কোটিপতি পাপিয়া
জেইউ/জেএইচ/পিআর