চীনের হুবেই প্রদেশ থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২ হাজার ৪৬২ জনে দাঁড়িয়েছে। হুবেই স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এ ভাইরাসে প্রদেশটিতে একদিনে মৃত্যু হয়েছে আরও ৯৬ জনের। সবমিলিয়ে হুবেই প্রদেশে করোনায় ২ হাজার ৩৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
Advertisement
এদিকে শনিবার আরও ৬৩০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে হুবেই কর্তৃপক্ষ। সবমিলিয়ে প্রদেশটিতে ৬৪ হাজার ৮৪ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। করোনা আক্রান্ত ৪০ হাজার ১২৭ জন রোগীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, যাদের মধ্যে ১ হাজার ৮৪৫ জনের অবস্থা আশঙ্কজনক। আর ১৫ হাজার ২৯৯ জন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, চীনের মূল ভূখণ্ডে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ৪৪২ জন। চীনের মূল ভূখণ্ডের বাইরে ২০ জনসহ মোট মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ৪৬২। এর মধ্যে ইরানে ৬ জনের, জাপানে ৩ জন, দক্ষিণ কোরিয়ায় ৪ এবং হংকং, ইতালি ও দুজন করে মৃত্যু হয়েছে। তাইওয়ান, ফিলিপাইন ও ফ্রান্সে একজন করে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়েছে। চীনের মূল ভূখণ্ডসহ বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৮ হাজার ৭২৪ জনে।
এদিকে চীনে থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে ইরানে পাঁচজনের মৃত্যু এবং ২৮ জন এতে আক্রান্ত হওয়ায় দেশটিতে থাকা ৭শর বেশি নাগরিককে ফিরিয়ে নিতে চার্টার ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছে কুয়েত। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) কুয়েত এয়ারওয়েজ ও কুয়েত বার্তা সংস্থা (কুনা) এ তথ্য জানিয়েছে। দেশটির বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, শনিবার প্রথম পাঁচটি ফ্লাইটে ১৩০ জন যাত্রী কুয়েত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেছে।
Advertisement
এর আগে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে গত বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) মধ্যপ্রাচ্যের প্রথম দেশ হিসেবে ইরানে দুজনের মৃত্যু হয়। শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) মৃত্যু হয় আরও দুজনের। পরে ইরানের মারকাজী প্রদেশের কেন্দ্রীয় শহর আরাকে শনিবার আরও এক করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি মারা গেছেন। এ পর্যন্ত ইরানের রাজধানী তেহরান এবং কোম ও গিলান প্রদেশে প্রাণঘাতী এই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
চীনের পর প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে এখন সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এখন পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ায় ৪৩৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে যে ৪৩৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের ২৩১ জন রোগী শিনচিওঞ্জি সম্প্রদায়ের সদস্য। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সরকার শিনচিওঞ্জি ধর্মীয় গোষ্ঠীর নয় হাজারেরও বেশি সদস্যকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ঘরের মধ্যে থাকার নির্দেশ দিয়েছে।
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী শহর উহান থেকে প্রথমবারের মতো ধরা পড়ে নভেল করোনাভাইরাস। এখন পর্যন্ত বিশ্বের অন্তত ২৯টি দেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে। উহানের একটি সামুদ্রিক খাবারের বাজার থেকে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বলে ধারণা করা হচ্ছে।
Advertisement
এমএসএইচ