খেলাধুলা

বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের অন্যরকম সেঞ্চুরি

শুক্রবার ভারতের বিপক্ষে ওয়েলিংটন টেস্টে খেলতে নেমে অন্যরকম সেঞ্চুরির বৃত্ত পূরণ করেছিলেন নিউজিল্যান্ডের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান রস টেলর। বিশ্বের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে গড়েছিলেন তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটে ১০০ ম্যাচ খেলার অভূতপূর্ব এক রেকর্ড।

Advertisement

আজ (শনিবার) একদিন পর তেমনই আরেক সেঞ্চুরি করলো বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে। বিরল কিছু নয়, তবে বাংলাদেশের জন্য প্রথমই বটে। মিরপুরের শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মুমিনুল হক ও ক্রেইগ আরভিনের টসের মাধ্যমে সেঞ্চুরি পূরণ হয়েছে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে দ্বৈরথের।

অর্থাৎ তিন ফরম্যাট মিলিয়ে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের ১০০তম ম্যাচ এই মিরপুর টেস্টটি। সেই ১৯৯৭ সালের অক্টোবরে কেনিয়ার নাইরোবিতে জিমখানা মাঠে প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। প্রায় সাড়ে ২২ বছর পর আজ তারা খেলছে নিজেদের ১০০তম ম্যাচটি।

এ সময়ের মধ্যে ১৭ টেস্ট, ৭২ ওয়ানডে ও ১১ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে। চলতি মিরপুর টেস্ট বাদ দিয়ে আগের ৯৯ ম্যাচে ৫৭টি জিতেছে বাংলাদেশ আর ড্র হয়েছে ৩টি ম্যাচ। বাকি ৩৯টি জয় গিয়েছে জিম্বাবুয়ের নামে। বর্তমান পরিসংখ্যানে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকলেও, এ দুই দলের লড়াইয়ে শুরুর দিকে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিলো জিম্বাবুয়েরই। সেটা ঠিক কতটা, তা জানান দিচ্ছে পরিসংখ্যান। ১৯৯৭ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত সময়ে খেলা ২০টি ম্যাচে বাংলাদেশের জয় ছিলো মাত্র ২টি, ড্র হয়েছিল আরও ২টি ম্যাচ। বাকি ১৬টি ম্যাচই জয়ী দল হিসেবে শেষ করেছিল রোডেশিয়ানরা।

Advertisement

তবে আবার সবশেষ ১৫ বছরের হিসেব করলে পাশার দান পুরোপুরি চলে আসবে বাংলাদেশের হাতে। এ সময়ের মধ্যে খেলা বাকি ৭৯ ম্যাচে টাইগাররা জিতেছে ৫৫টিতে, ড্র করেছে ১টি আর পরাজিত হয়েছে বাকি ২৩টিতে।

এ তো গেল দলীয় পরিসংখ্যানের কথা। ব্যক্তিগত হিসেবে এগিয়ে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটাররাই। এর কারণ অবশ্য তারাই খেলেছে বেশি ম্যাচ। মিরপুর টেস্টের আগের ৯৯ ম্যাচের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৭১টিতে ছিলেন হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে বেশি ৬৩টিতে ছিলেন মুশফিকুর রহীম।

বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে লড়াইয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ

১. হ্যামিল্টন মাসাকাদজা - ৭১ ম্যাচ২. এল্টন চিগুম্বুরা - ৬৮ ম্যাচ৩. ব্রেন্ডন টেলর - ৬৫ ম্যাচ (চলতি টেস্ট তার ৬৬তম ম্যাচ)৪. মুশফিকুর রহীম - ৬৩ ম্যাচ (চলতি টেস্ট তার ৬৪তম ম্যাচ)৫. সাকিব আল হাসান - ৬০ ম্যাচ

Advertisement

বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে লড়াইয়ে সবচেয়ে বেশি রান

১. ব্রেন্ডন টেলর - ৭৪ ইনিংসে ২৪৮২ রান, ৭ সেঞ্চুরি, সর্বোচ্চ ১৭১২. হ্যামিল্টন মাসাকাদজা - ৮১ ইনিংসে ২৪৪৯ রান, ৪ সেঞ্চুরি, সর্বোচ্চ ১৫৮৩. সাকিব আল হাসান - ৬৩ ইনিংসে ২০৭৪ রান, ৪ সেঞ্চুরি, সর্বোচ্চ ১৩৭৪. মুশফিকুর রহীম - ৬৭ ইনিংসে ২০৬৯ রান, ৩ সেঞ্চুরি সর্বোচ্চ ২১৯*৫. তামিম ইকবাল - ৫৫ ইনিংসে ১৯৪৬ রান, ৩ সেঞ্চুরি, সর্বোচ্চ ১৫৪

বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে লড়াইয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট

১. সাকিব আল হাসান - ৬৬ ইনিংসে ১১৩ উইকেট, চারবার ৫ উইকেট, সেরা বোলিং ৬/৫৯২. মাশরাফি বিন মর্তুজা - ৫৬ ইনিংসে ৮৫ উইকেট, ৫ উইকেট নেই, সেরা বোলিং ৪/৩১৩. আব্দুর রাজ্জাক - ৩৭ ইনিংসে ৬৩ উইকেট, তিনবার ৫ উইকেট, সেরা বোলিং ৫/২৯৪. রেমন্ড প্রাইস - ৩২ ইনিংসে ৫২ উইকেট, ৫ উইকেট নেই, সেরা বোলিং ৪/২২৫. কাইল জার্ভিস - ২৫ ইনিংসে ৪৮ উইকেট, একবার ৫ উইকেট, সেরা বোলিং ৫/৭১

এছাড়া জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের সঙ্গে মিশে আছে বাংলাদেশের অনেক প্রথম। ১৯৯৯ সালের মার্চে মেরিল ইন্টারন্যাশনাল কাপে তাদের বিপক্ষেই বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি করেছিলেন মেহরাব হোসেন অপি। বছর ছয়েক পরে জিম্বাবুয়েকে হারিয়েই প্রথম টেস্ট ও প্রথম টেস্ট সিরিজ জয় করেছিল বাংলাদেশ। একই বছর তাদের হারিয়ে প্রথম ওয়ানডে সিরিজ জয়টাও পেয়েছিল টাইগাররা।

এর বাইরে দেশের টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ২১৯ রানের অপরাজিত ইনিংসটা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই খেলেছিলেন মুশফিকুর রহীম (২০১৮ সালের মিরপুর টেস্ট)। আবার বোলিংয়েও দেশের ইতিহাসের সেরা ৩৯ রানে ৮ উইকেটের কীর্তিটা জিম্বাবুয়ের সঙ্গেই করেছিলেন তাইজুল ইসলাম (২০১৪ সালের মিরপুর টেস্ট)।

এসএএস/এমএমআর/পিআর