তথ্যপ্রযুক্তি

ব্লু হোয়েলের চেয়েও ভয়ঙ্কর টিকটকের ‘স্কাল ব্রেকার’

সুইসাইড গেম ব্লু হোয়েলের কথা মনে আছে নিশ্চয়ই! গেমটিতে আসক্তি শেষ পর্যন্ত ব্যক্তির মৃত্যুর কারণ হতে পারে বলে এর অপর নাম ‘সুইসাইড গেম’। এই খেলার শেষ চ্যালেঞ্জ হচ্ছে নিজেকে খুন করা অর্থাৎ আত্মহত্যা। তথাকথিত এই সুইসাইড গেম-এর সঙ্গে শোনা যায় শতশত মৃত্যুর ঘটনা। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি নতুন যে গেম ভাইরাল হয়েছে, বলা হচ্ছে এটি ব্লু হোয়েলের চেয়েও অনেক বেশি ভয়ঙ্কর।

Advertisement

সম্প্রতি খুদে ভিডিও প্রকাশের অ্যাপ টিকটক-এ ভাইরাল হয়েছে ‘স্কাল ব্রেকার’ নামে একটি চ্যালঞ্জ। এর আরেকটি নাম দেয়া হয়েছে ‘ট্রিপিং জাম্প’।

নতুন এই চ্যালেঞ্জ নিতে দরকার হয় তিনজনের। প্রথমে তাদের পাশাপাশি দাঁড়াতে হয়। এরপর মাঝের জন বাদে পাশের দুই ব্যক্তি শূন্যে লাফ দেবে। আর তাদের লাফ দেয়ার এ সময়ে লাফ দিতে হবে মাঝে থাকা ব্যক্তিকে। আর চ্যালেঞ্জটা নিতে হবে ঠিক তখনই। তিনি লাফ দিয়ে শুন্যে থাকা অবস্থায় পাশে থাকা দুই ব্যক্তি তার পায়ে আঘাত করবে।

টিকটকে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তৃতীয় ব্যক্তি শূন্যে থাকা অবস্থায় তার পায়ে তাদের পা দিয়ে আঘাত করছে পাশে থাকা দুজন। এতে তৃতীয় ব্যক্তি মাটিতে পড়ে যাচ্ছে।

Advertisement

প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট গ্যাজেটস নাউ তাদের এক প্রতিবেদনে বলেছে, নতুন এই গেমকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে শুরু করেছে স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। ‘খুবই ঝাঁকিপূর্ণ’ এই চ্যালেঞ্জকে নৃত্যের নতুন ধাপ মনে করতে শুরু করেছে তারা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন এই গেমটিতে অনেক ঝুঁকি রয়েছে। যে চ্যালেঞ্জটি নিচ্ছে অর্থাৎ পা দিয়ে যাকে আঘাত করা হচ্ছে, পড়ে গিয়ে তার নিতম্ব, হাঁটু, মাথা, গোড়ালি বা শরীরের অন্যান্য জয়েন্টে মারাত্মক আঘাত লাগতে পারে। মেরুদণ্ডেও প্রচণ্ড আঘাত লাগার সম্ভাবনা রয়েছে।

গ্যাজেটস নাউয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, ধারণা করা হচ্ছে, ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার স্কুল থেকে গেমটি শুরু হয়েছে। এরপর বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।

টিকটকের একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, স্কুল পড়ুয়া দুটি মেয়ে তাদের অপর ক্লাসমেটকে ট্রিপ (আঘাত করে ফেলে দিচ্ছে) দিচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভিডিওটি মেক্সিকোর কোনো স্কুল থেকে ধারণ করা হয়। একই রকম অন্যান্য ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

Advertisement

টিকটকের নতুন এই চ্যালেঞ্জকে ‘ঝুাঁকিপূর্ণ’ বিবেচনায় স্কুলের শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবককে এ বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার কিছু স্কুল।

গ্যাজেটস নাউ তাদের প্রতিবেদনে আরও জানায়, ‘স্কাল ব্রেকার’ চ্যালেঞ্জটি ব্যাপকভাবে ফরোয়ার্ড হচ্ছে ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং ওয়েবসাইট হোয়াটসঅ্যাপে। তবে এটি করা হচ্ছে মূলত অভিভাবকদের এ বিষয়ে সচেতন করতে।

তবে টিকটকে ছড়িয়ে পড়া ‘স্কাল ব্রেকার’ প্রথম কোনো চ্যালেঞ্জ নয়। ‘ব্রাইট আই’ ও ‘আউটলেট’ নামে আরও কয়েকটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে অ্যাপটিতে।

এর আগে ব্লু হোয়েল বা ‘নীল তিমি’ নামে অনলাইন গেমটি রাশিয়া থেকে শুরু হয়েছিল। সুইসাইড গেমটি পরে ছড়িয়ে পড়ে ইউক্রেন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রে। প্রাণঘাতী গেমটি খেলতে গিয়ে কয়েক শ জনের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

The #skullbreakerchallenge which is currently trending on #tiktok is fatal. Please pay attention to our kids. pic.twitter.com/SQi9RPpk6j

— Nicole Wong 王晓庭 (@nicolewong89) February 14, 2020

এসআর/পিআর