রাজনীতি

সমন্বয় করে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখব : রেজাউল করিম

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর প্রথমবারের মতো নিজ শহরে এসে রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, তিনি নির্বাচিত মেয়র হলে সবার সঙ্গে সমন্বয় করে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবেন।

Advertisement

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে চট্টগ্রাম পুরাতন রেল স্টেশন চত্বরে নগর আওয়ামী লীগের গণসংবর্ধনায় তিনি এসব কথা বলেন।

রেজাউল করিম বলেন, ‘অর্থবিত্তের প্রতি আমার লোভ নেই। এই মেয়র নির্বাচনে আমাদের অনেক নেতা মনোনয়ন চেয়েছেন। নেত্রী আমাকে সেই মনোনয়ন দিয়েছেন। আমি শেখ হাসিনার প্রতিনিধি ছাড়া কিছু নই। এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ১৭ বছর এই চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে দায়িত্ব পালন করেছেন। মাঝখানে পাঁচবছর বিএনপির মেয়র প্রার্থী ছিলেন। ২০১৫ সালে আবারও এই সিটি আমাদের হাতে এসেছে। মহিউদ্দিন চৌধুরী-আ জ ম নাছির উদ্দিন যে জনবান্ধব নগড়ে গড়ে তুলেছেন, আমি মেয়র নির্বাচতি হলে সেই ধারা অব্যাহত রাখব।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত সময়ে চট্টগ্রামে রেকর্ড সংখ্যক উন্নয়ন কাজ হয়েছে। সিডিএ চেয়ারম্যান ছালাম সাহেব (আবদুচ ছালাম) যে উন্নয়নের ধারা সৃষ্টি করেছেন, বর্তমান চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ তা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আমি মেয়র নির্বাচিত হলে তা অব্যাহত রাখব। আমি সমন্নিতভাবে উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’

Advertisement

রেজাউল করিম বলেন, ‘এই নগরী হবে পরিকল্পিত নগরী। সকলকে সঙ্গে নিয়ে একটি বসবাসযোগ্য, মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত নগরী গড়তে কাজ করবো। এ জন্য প্রয়োজন সমন্বয়। চট্টগ্রামের বিশেষজ্ঞ, পরিকল্পনাবিদ, প্রশাসন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির সকল সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে এ নগরীকে গড়ে তোলা হবে।’

নগর আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নমিনেশন দিয়েছেন সে জন্য আমি কৃতজ্ঞ। জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও তার মর্যাদা রক্ষা করবো। এই সমাবেশে দাঁড়িয়ে আমি স্মরণ করতে চাই, যাদের হাত ধরে একদিন রাজনীতিতে এসেছিলাম, সেই সৈয়দ মোফাজ্জল হোসেন, জহুর আহমদ চৌধুরী, এমএ আজিজ, কাজেম আলী মাস্টার, এম এ মান্নান ও এই শহরের অবিসংবাদিত নেতা মহিউদ্দীন চৌধুরীকে। আমি যদি নির্বাচিত হই তাহলে সেই মহান নেতাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করবো।’

চট্টগ্রামের ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সূতিকাগার এই চট্টগ্রাম। চট্টগ্রামের ঐতিহ্য আছে, কৃষ্টি আছে, সংস্কৃতি আছে, স্বাধীনতার ৬ দফা এখান থেকেই ঘোষিত হয়েছিল।’

চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করবেন জানিয়ে রেজাউল করিম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লালদীঘির ময়দানে বলেছিলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব তিনি নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন। তাই জলাবদ্ধতা নিরসনে তিনি সিডিএকে ৮ হাজার কোটি টাকা দিয়েছেন। আমি নির্বাচিত হলে তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করব।’

Advertisement

এ সময় তিনি মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিজয় উপহার দেয়ার জন্য সকল নেতাকর্মীকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।

মহানগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরীর পরিচালনায় বেলা দুইটার দিকে গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান শুরু হলেও বেলা ১২টা থেকেই হাজার হাজার নেতাকর্মী চট্টগ্রাম পুরাতন রেল স্টেশন চত্বরে সমবেত হতে থাকেন। বিকেল ৩টা পর্যন্ত প্রচণ্ড রোদ উপেক্ষা করে তাদের সেখানে অবস্থান করতে দেখা যায়।

সমাবেশ স্থলে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের নানা ধরনের ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড বহন করতে দেখা গেছে। এর মধ্যে নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে কর্মী-সমর্থকরা তাদের সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ডও বহন করে।

সমাবেশে বক্তব্য দেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ এমপি, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম।

উপস্থিত ছিলেন- দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চুসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

আবু আজাদ/এমএসএইচ/এমএস