জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে কোয়ারেন্টাইনে থাকা প্রমোদতরী প্রিন্সেস ডায়মন্ডের শত শত যাত্রী অবশেষে ছাড়া পাচ্ছেন। এই প্রমোদতরীর কোয়ারেন্টাইন মেয়াদ শেষ হওয়ায় যেসব যাত্রীর শরীরে করোনাভাইরাসের লক্ষণ পাওয়া যায়নি বুধবার থেকে তারা নিজ নিজ দেশে ফেরত যাবেন।
Advertisement
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, জাপানের বন্দরে নোঙ্গররত প্রমোদতরী প্রিন্সেস ডায়মন্ড থেকে শত শত যাত্রীর কোয়ারেন্টাইন শেষ হচ্ছে বুধবার।
চীনের মূল ভূখণ্ডে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের মৃত্যুর সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়ে গেছে। দেশটিতে টানা দ্বিতীয়দিনের মতো নতুন করে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা কমে এসেছে। মহামারির শঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা দুশ্চিন্তায় থাকলেও করোনার প্রকোপ কমে আসায় এশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে চাঙ্গাভাব ফিরেছে।
হুবেই প্রদেশ থেকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসের লাগাম টানতে কঠোর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন। দেশটি উৎপাদন খাতের গতি আগের ধারায় ফিরিয়ে আনতে এখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
Advertisement
বুধবার জাপানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকে বলছে, রাজধানী টোকিওর ইয়োকোহামা বন্দরে নোঙ্গররত করোনায় বিপর্যস্ত প্রিন্সেস ডায়মন্ডের প্রায় ৫০০ যাত্রী এই প্রমোদতরী ছাড়তে যাচ্ছেন। এক যাত্রীর শরীরে করোনাভাইরাসের লক্ষণ পাওয়ার পর গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে এই বন্দরে কোয়ারেন্টাইনে ছিল প্রিন্সেস ডায়মন্ড।
কার্নিভাল করপোরেশনের বিলাসবহুল এই প্রমোদতরীতে প্রায় ৩ হাজার ৭০০ যাত্রী ছিলেন। করোনাভাইরাসের প্রাণকেন্দ্র চীনের হুবেই প্রদেশের বাইরে সর্বোচ্চসংখ্যক আক্রান্ত এখন এই প্রমোদতরীতে। সেখানে ৫৪০ জনের শরীরে করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ এর লক্ষণ পাওয়া গেছে।
তরীটি থেকে ইতোমধ্যে তিন শতাধিক নাগরিককে ফিরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বের অন্যান্য দেশও তাদের নাগিরকদের ফিরিয়ে নেয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে। বুধবার আরও পরের দিকে অস্ট্রেলিয়ার একটি বিমান জাপানে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। এই বিমানে করে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে নেয়া হবে।
প্রমোদতরীটির অস্ট্রেলীয় যাত্রী ভিকি প্রিসল্যান্ড টেলিফোনে বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, আমরা সৌভাগ্যবান। আমরা তরীটির একটি কক্ষ, ব্যালকনি এবং লাউঞ্জ এলাকায় আবদ্ধ ছিলাম। এই কেবিনে আবদ্ধ থাকার পর আমি তরীটি থেকে নামার জন্য উদগ্রীব।
Advertisement
তবে জাপানের কর্মকর্তারা বলেছেন, কোয়ারেন্টাইনে থাকাকালীন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় যাদের শরীরে করোনার আলামত পাওয়া যায়নি, শুধুমাত্র তারাই তরী ছাড়ার অনুমতি পাবেন। একই সঙ্গে যাদের শরীরে করোনার লক্ষণ পাওয়া যায়নি, কিন্তু আক্রান্তদের সঙ্গে ছিলেন; তারা আবারও অতিরিক্ত কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন।
বুধবার চীনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, দেশটিতে মঙ্গলবার নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন আরও এক হাজার ৭৪৯ জন এবং মারা গেছেন ১৩৬ জন। ফলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে শুধুমাত্র চীনেই মারা গেলেন ২০০৪ জন এবং চীনের বাইরে হংকংয়ে ২, তাইওয়ান ১, জাপান ১, ফ্রান্স ১ এবং ফিলিপাইন একজন করে মারা গেছেন।
এছাড়া চীনে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৭৪ হাজার ১৮৫ জন এবং চীনের বাইরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এক হাজার ১১ জন। অর্থাৎ বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এই মুহূর্তে ৭৫ হাজার ১৯৬ জনে পৌঁছেছে।
সূত্র : রয়টার্স, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
এসআইএস/জেআইএম