চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের মোলান এখন পাখি গ্রাম হিসেবে পরিচিত। প্রতিদিনই এই গ্রামে পাখি দেখতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ভিড় করেন অসংখ্য দর্শনার্থী। ওই গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, কদম, শিমুল ও বাঁশ ঝাড়ে শামুকখোল পাখি। যেদিকে চোখ যায়, সেদিকেই শুধু সারি সারি বক প্রজাতির শামুকখোল। আকাশে ঝাঁকে ঝাঁকে ডানা মেলে উড়ছে আর নেমে আসছে কদম, শিমুল আর বাঁশ ঝাড়ে। শামুকখোল বক প্রজাতির পাখি। এর ইংরেজী নাম এশিয়ান ওপেন বিল। এ পাখি ভারত উপ মহাদেশসহ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় দেখা যায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মোলান গ্রামের কৃষক পরিবার ওয়াহেদুল ইসলাম তার বড় ভাই সাবেক ইউপি সদস্য সাইদুর রহমান, হায়াত আলী, বাইদুল হক ও যবদুল হকের বাড়ির পাশে গড়ে উঠেছে এসব পাখির আবাসস্থল।ভোর থেকে সুর্যাস্ত পর্যন্ত বকের কিচির মিচির শব্দে মুখোর হয়ে থাকে ওই এলাকা। মন ভোলানো এই দৃশ্য মুগ্ধ করছে পাখি প্রেমীদের। চরাঞ্চলের সবুজ প্রকৃতি আর বক পাখির নিবিড় বন্ধন দেখতে প্রতিদিন সেখানে ছুটে যাচ্ছেন দর্শনার্থীরা। ওয়াহেদুল ইসলাম জানান, ৮ বছর আগে হঠাৎ করেই তাদের গ্রামে বক প্রজাতির শামুকখোল পাখি আসতে শুরু করে। গত ৫ বছর ধরে তার বাড়ির গাছে তারা বাসা বেঁধে বসবাস করছে। গ্রামের মানুষও তাদের আপন করে নিয়েছে। অনেক সময় শহর থেকে অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি এসে এসব পাখি শিকারের চেষ্টা করলেও গ্রামবাসীর প্রতিরোধের মুখে তারা ফিরে যেতে বাধ্য হয়।তার বড় ভাই সাইদুর রহমান জানান, পাখিগুলোর কারণে মাঝে মধ্যে বিরক্ত হলেও এখন তাদের পরিবারের সদস্য হয়ে গেছে পাখিগুলো। তাদের বাড়ির আশপাশে ছাড়াও অদুরে বিভিন্ন গাছে হাজারেরও অধিক শামুকখোল বসবাস করছে নির্বিঘ্নে। তাছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের বাখের আলী ক্যাম্পের জওয়ানরা পাখিগুলো রক্ষায় মাঝে মধ্যে গ্রামে টহল দেয় এবং গ্রামবাসীকে সবধরনের সহায়তা দিচ্ছে।চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের একজন ব্যবসায়ী সাজেদুর রহমান বলেন, পাখির গল্প শুনে তিনি এ গ্রামে পাখি দেখতে এসেছেন। পাখি দেখে তিনি মুগ্ধ হয়েছেন।সুন্দরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান জানান, এ পাখিগুলো আমাদের সম্পদ। কেউ যেন শিকার না করে এ ব্যাপারে গ্রামবাসীকে সজাগ থাকার জন্য তিনি তাদেরকে বলেছেন। গ্রামবাসী পাখিগুলো রক্ষায় যথেষ্ট সচেষ্ট।চাঁপাইনবাবগঞ্জ বন বিভাগের ফরেস্ট রেঞ্জার এএসজি মোস্তফা বলেন, তাদের বিভাগের লোকজন বেশ কয়েকবার ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তাদের বিভাগ থেকে পাখিগুলো রক্ষায় উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।আব্দুলাহ/এমএএস/পিআর
Advertisement