খেলাধুলা

‘ভারত বুঝুক, হারের পর সামনে এসে উল্লাস করলে কেমন লাগে’

যুব বিশ্বকাপের ফাইনাল শেষে কি লঙ্কাকাণ্ডই না বেঁধে গিয়েছিল বাংলাদেশ আর ভারতের খেলোয়াড়দের মধ্যে। কথা কাটাকাটি আর ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়ার জেরে নিষেধাজ্ঞাও পেতে হয়েছে দুই দেশের পাঁচ ক্রিকেটারকে।

Advertisement

তবে এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বাংলাদেশের তেমন একটা মাথাব্যথা নেই। প্রতিশোধ তো নেয়া গেছে! হারের পর এতদিন সামনে এসে উল্লাস করেছে ভারত, এবার তাদেরই ফাইনালে হারিয়ে বিশ্বকাপ জিতেছে বাংলাদেশের যুবারা। জবাব দিয়েছে মাঠেই।

পচেফস্ট্রমে ফাইনাল ম্যাচের পর বাংলাদেশ ও ভারতের ক্রিকেটারদের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি অবশ্য ভালো চোখে দেখছেন না ক্রিকেটবোদ্ধারা। এই ঘটনায় বাংলাদেশের ৩ এবং ভারতের ২ জন ক্রিকেটার নিষিদ্ধ হন।

ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে অবশ্য বাংলাদেশের দিকেই আঙুল তুলেন ভারতীয় যুব দলের অধিনায়ক প্রিয়ম গর্গ। তিনি বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের আচরণ ছিল জঘন্য।’

Advertisement

তবে এমন কথা বলে নিজের দেশেও সমর্থন পাচ্ছেন না প্রিয়ম গার্গ। কপিল দেব, মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের মতো কিংবদন্তিরা ভারতীয় যুবাদের আচরণেরই বরং সমালোচনা করেছেন।

সমালোচনা অবশ্য হতেই পারে। ফাইনাল জয়ের পর মাঠের মধ্যে আনন্দ-উদযাপনে ব্যস্ত ছিল বাংলাদেশ দল। যেহেতু তারা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, উচ্ছ্বাসটা বাধভাঙা হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু হারের পর তাদের সামনে দাঁড়িয়ে এমনভাবে উচ্ছ্বাস করা মেনে নিতে পারেননি ভারতীয় খেলোয়াড়দের কয়েকজন। বাংলাদেশের পতাকা ধরে টান দেন এক খেলোয়াড়। যা নিয়েও সমালোচনা হয়েছে বিস্তর।

কিন্তু বাংলাদেশই বা কেন এত আগ্রাসী হয়ে উঠেছিল? জয়ের পর ভারতীয়দের সামনে গিয়ে উদযাপন করার পেছনে রহস্যই বা কী? এ নিয়ে এবার মুখ খুললেন বিশ্বকাপে বল হাতে আলো ছড়ানো বাংলাদেশি পেসার শরিফুল ইসলাম।

শরিফুল জানালেন, মূলত এর আগের কিছু ঘটনাই তাঁতিয়ে রেখেছিল তাদের। অতীতে বাংলাদেশের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ দুটি ম্যাচে জয় পাওয়ার পর বাড়তি উদযাপন করেছিল ভারত, সেই প্রতিশোধই মনের মধ্যে ঘুরছিল জুনিয়র টাইগারদের।

Advertisement

২০১৮ সালে এশিয়া কাপের সেমিফাইনাল আর ২০১৯ সালের এশিয়া কাপ ফাইনালে ভারতের কাছে হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। সে সময় ভারতীয়রাও সামনে এসে উদযাপন করেছিল, জানান শরিফুল।

যুব দলের এই পেসার বলেন, ‘অতীতে আমরা দুটো ম্যাচ ওদের (ভারত) কাছে হেরে গিয়েছিলাম। ওই দুটো হারের অনুভূতি আমার পক্ষে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। জেতার পরে ওরা কী করেছিল, সেই ঘটনাগুলো যুব বিশ্বকাপ ফাইনালে নামার আগে আমার মনে পড়ে গিয়েছিল। ওই দুটো ম্যাচ জিতে উঠে আমাদের সামনে ওরা আনন্দে ফেটে পড়েছিল। আমরা কিছুই বলতে পারিনি তখন। তার পর থেকে আমরা অপেক্ষায় ছিলাম। ওদের বিরুদ্ধে কবে ফাইনালে খেলতে নামব, তার দিন গুনছিলাম।’

শরিফুল যোগ করেন, ‘ফাইনালে নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দিতে চেয়েছিলাম। সেটা আমরা দিয়েছি। ম্যাচ হারার পরে তাদের সামনে কেউ যদি উল্লাস করে, উৎসবে মেতে ওঠে, তা হলে কেমন লাগে সেটা নিশ্চয় এখন টের পাচ্ছে ভারত।’

এমএমআর/জেআইএম