চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে বেড়েই চলেছে মৃতের সংখ্যা। দেশটিতে একদিনে আরও ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে করোনাভাইরাসে বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১ হাজার ৭৭৫ জনে।
Advertisement
সোমবার হুবেই স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) হুবেই প্রদেশে আরও ১০০ জন করোনাভাইরাস থেকে সৃষ্ট কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এছাড়া পার্শ্ববর্তী হেনান প্রদেশে তিনজন এবং গুয়াংডং প্রদেশে দু’জন এই রোগে মারা গেছেন।
রোববার চীনের আরও ২ হাজার ৪৮ জন নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশটির মূল ভূখণ্ডে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭০ হাজার ৫৪৮ জন। আর বিশ্বব্যাপী করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭১ হাজার ৩২৬ জনে।
চীনের মূল ভূখণ্ডের বাইরে করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচজন। এখন পর্যন্ত ১০ হাজার ৮৪৪ জন কোভিড-১৯ রোগী সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন।
Advertisement
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথমবারের মতো ধরা পড়ে নভেল করোনাভাইরাস। এখন পর্যন্ত এটি বিশ্বের অন্তত ২৮টির বেশি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। চীনের হুবেই প্রদেশের উহানের একটি সামুদ্রিক খাবারের বাজার থেকে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু।
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি পাওয়া যায়নি। তবে সিঙ্গাপুরে পাঁচ বাংলাদেশি করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে চ্যানেল নিউজ এশিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত শনিবার সিঙ্গাপুরে নতুন করে আরও পাঁচজনকে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজন দেশটির গ্রেস অ্যাসেম্বলি অব গড চার্চের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। একজন সেলেটার অ্যারোস্পেস হেইটস নির্মাণাধীন স্থাপনায় কর্মরত ছিলেন।
চীন এবং করোনাভাইরাস আক্রান্ত অন্যান্য দেশ থেকে দিল্লিতে আসা কয়েক হাজার মানুষের শরীর পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ১৭ জনের শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। গত মাসের মাঝের দিক দিল্লি বিমানবন্দরে কয়েক হাজার মানুষের শরীর পরীক্ষা করা হয়। এ সময় ওই ১৭ জনের শরীরে করোনার লক্ষণ পাওয়া যায়। পরে তাদের দিল্লির হাসপাতালে ভর্তি করে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জাপানে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। প্রাণঘাতী এ রোগে আক্রান্ত হয়ে জাপানে এই প্রথম রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ৮০ বছরের ওই বৃদ্ধা জাপানের কানাগাওয়া জেলার বাসিন্দা।
Advertisement
গত ৪ ফেব্রুয়ারি জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে পৌঁছার পর থেকেই কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে ব্রিটিশ প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেস। এখন পর্যন্ত এর ২১৯ যাত্রীর শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চীনে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বিশ্বের বাকি দেশগুলোর জন্য ভয়াবহ হুমকি হতে পারে। করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট রোগের নাম দেওয়া হয়েছে কোভিড-১৯ (COVID-19)।
নতুন এই ভাইরাস থেকে সৃষ্ট রোগ এখন থেকে কোভিড-১৯ নামেই পরিচিত হবে। ভাইরাসটির নামের CO দিয়ে করোনা, VI দিয়ে ভাইরাস, D দিয়ে ডিজিজ (রোগ) এবং 19 দিয়ে ২০১৯ সালকে নির্দেশ করা হয়েছে। গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথমবারের মতো নতুন এই ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে।
সূত্র: রয়টার্স, সিএনএন
এমএসএইচ