ক্যাম্পাস

আন্দোলনকারীদের বাধা উপেক্ষা করে একাডেমিক সভায় জাবি ভিসি

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘পদদলিত’ করে একাডেমিক সভায় প্রবেশ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম।

Advertisement

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো প্রশাসনিক ভবনে এ ঘটনা ঘটে বলে দাবি করছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। একাডেমিক কাউন্সিলের সভা ভবনের সিনেট হলে অনুষ্ঠিত হয়।

এ ঘটনায় ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হক রনি, ছাত্রফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী) বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাহাথির মুহাম্মদ ও সাধারণ সম্পাদক সুদিপ্ত দে লাঞ্ছিত হন বলে দাবি করেছেন। তবে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ছাড়াই উপাচার্য একাডেমিক সভাকক্ষে প্রবেশ করেন বলে দাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য একাডেমিক সভা ‘প্রতিহত’ করার ঘোষণা দিয়ে উপ-উপাচার্যের সভাপতিত্বে তা অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয় আন্দোলনকারী শিক্ষকদের সংগঠন ‘সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ’।

Advertisement

এ দাবি আমলে না নিয়ে একাডেমিক সভায় অংশ নিতে পুরোনো প্রশাসনিক ভবনে হাজির হন উপাচার্য। এ সময় উপাচার্যপন্থী শিক্ষক এবং আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের বাধা উপেক্ষা করে একাডেমিক সভাকক্ষে প্রবেশ করেন উপাচার্য। এ সময় উপাচার্য ও তার সমর্থক শিক্ষকরা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ‘লাঞ্ছিত’ করেন বলে দাবি করেন তারা।

এ ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল করেন ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে মুরাদ চত্বরে গিয়ে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হক রনি বলেন, উপাচার্যসহ উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা আমাদের পদদলিত করে একাডেমিক সভায় অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া একজন শিক্ষক আমাদের এক আন্দোলনকারীকে গলা চেপে ধরেছেন। এর আগেও গত ৫ নভেম্বর আমরা দেখেছি একই কায়দায় শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা গায়ের জোরে নয় বরং যুক্তি দিয়ে কথা বলবেন বলে আমরা কামনা করি।

ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি মিখা পিরেগু বলেন, পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আমরা সিনেট হলের সামনে অবস্থান নেই। কিন্তু সেখানে ভিসিপন্থী শিক্ষকরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে আক্রান্ত করে একধরনের সন্ত্রাসী কায়দায় ভিসিকে সিনেট হলে প্রবেশ করিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় গায়ের জোরে চলবে না, বিশ্ববিদ্যালয় চলবে নৈতিকতার জোরে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যে লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটেছে এর প্রতিবাদে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ দাঁত ভাঙা জবাব দেবে। এছাড়া এই ভিসির সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের সভা ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ সর্বাত্মকভাবে প্রতিহত করবে।

Advertisement

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, একাডেমিক সভায় অধ্যাপকরা প্রবেশ করতে চাইলে শিক্ষার্থীরা বাধা দেয়। তারা বলছিল, শিক্ষকরা প্রবেশ করতে পারবেন তবে উপাচার্য প্রবেশ করতে পারবেন না। তখন অধ্যাপকরা বলছেন, তারা উপাচার্যকে নিয়েই প্রবেশ করবেন। একসঙ্গে প্রায় ৭০-৮০ জন অধ্যাপক ঢুকেছেন, তখন রাকিবুল রনি (ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক) পড়ে যান। তবে কোনো ধরনের ধাক্কাধাক্কি সেখানে হয়নি। একাডেমিক সভায় কে সভাপতিত্ব করবে সেটা শিক্ষার্থীরা বলার কেউ না। তাদের কোনো কর্মসূচি সম্পর্কে আমাদের অবহিত করেনি।

ফারুক হোসেন/এএম/এমকেএইচ