নভেল করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর থেকেই সংক্রমিত এলাকাগুলোর চিত্র অনেকটা একই। রাস্তাঘাটে মানুষ কম, পথচারীর মুখে মাস্ক, সারা শরীরে ভাইরাসপ্রতিরোধী বিশেষ পোশাক চিকিৎসক-নার্সদের। কিন্তু যার জন্য এত আতঙ্ক, সেই করোনাভাইরাস দেখতে কেমন?
Advertisement
সম্প্রতি প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের ছবি প্রকাশ করেছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (এনআইএআইডি)। এটি যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের একটি অংশ। হ্যামিল্টনের রকি পর্বতমালার ল্যাবে তারা করোনাভাইরাসের ছবি ধারণ করেছে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন স্ক্যানিং অ্যান্ড ট্রান্সমিশন ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপ দিয়ে।
এনআইএআইডির মলিকিউলার প্যাথোজেনেসিস ইউনিটের প্রধান এমি ডি উইট এই ভাইরাসের নমুনা সরবরাহ করেন। মাইক্রোস্কোপিস্ট এলিজাবেথ ফিশার এর ছবি ধারণ করেন এবং ল্যাবের ভিজ্যুয়াল মেডিকেল আর্ট বিভাগ ওই ছবি রঙিন করে তোলে।
মানব কোষের (ধূসর) ওপর করোনাভাইরাস (হলুদ/কমলা)
Advertisement
এনআইএআইডি জানিয়েছে, নভেল করোনাভাইরাসের আণবিক চিত্র ২০০২ সালের সার্স (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম) ও ২০১২ সালের মার্স (মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম) ভাইরাসের সঙ্গে অনেকটাই মিলে যায়। যদিও এটা মোটেও আশ্চর্যজনক নয়।
মিল থাকার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে এনআইএআইডি এক ব্লগ পোস্টে জানায়, কাঁটাযুক্ত উপরিভাগের জন্যই করোনাভাইরাস পরিবারের নামে ‘করোনা’ যুক্ত হয়েছে। ল্যাটিন এই শব্দটির অর্থ ‘মুকুট’। বেশিরভাগ করোনাভাইরাসই এ ধরনের কাঁটা/মুকুটযুক্ত।
সংখ্যা বেড়েছে করোনাভাইরাসের
গত মঙ্গলবার নভেল করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট রোগের নাম ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এখন থেকে একে সিওভিআইডি-১৯ নামে ডাকা হবে।
Advertisement
করোনাভাইরাস পরিবারের সর্বশেষ সদস্য হওয়ায় ভাইরাসটিকে ‘নভেল করোনাভাইরাস’ বলা হচ্ছে। এর নাম এনসিওভি-১৯ অর্থ হচ্ছে ‘২০১৯ সালের নতুন করোনাভাইরাস’। এনসিওভি-১৯ থেকে সৃষ্ট রোগ সিওভিআইডি-১৯, এর অর্থও একই ধরনের- ‘২০১৯ সালের করোনাভাইরাস রোগ’।
করোনাভাইরাসের গায়ে ছোট ছোট কাঁটার মতো দেখা যাচ্ছে
আগে ভাইরাসের নামকরণের ক্ষেত্রে উৎপত্তিস্থল, পোষক প্রাণী বা জড়িত অন্যান্য বিষয়ের নাম যুক্ত হতো। কিন্তু এর কারণে ওই নামগুলো ‘কলঙ্কিত’ হতো জানিয়ে নতুন ভাইরাসের ক্ষেত্রে সে পদ্ধতি বাদ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এখন থেকে ভাইরাসের নতুন নামকরণের ক্ষেত্রে শুধু গোত্র ও সাল উল্লেখ থাকবে বলে জানিয়েছে তারা।
গত বছরের শেষ দিন, অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে প্রথমবারের মতো ধরা পড়ে নভেল করোনাভাইরাস। এখন পর্যন্ত এটি বিশ্বের অন্তত ২৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্বজুড়ে এতে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৭ হাজারেরও বেশি মানুষ। শুক্রবার পর্যন্ত এ ভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১ হাজার ৫২৬ জন। এর মধ্যে তিনটি বাদে সবগুলো মৃত্যুর ঘটনাই চীনে।
সূত্র: এনপিআর, ডেইলি এক্সপ্রেস, সিএনএন
কেএএ/এমএস