আশা নিরাশায় দুলছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। কেউ বলছেন দেশটির শ্রমবাজার নেপালের দখলে। আবার কেউবা বলছেন পাকিস্তানের। আসলেই কোনদিকে দেশটির শ্রমবাজার মোড় নিচ্ছে সেটি কেউই বলতে পারছেন না। তবে অনেকেই চলতি মাসের ২৪ ফেব্রুয়ারি উভয় দেশের কারিগরি কমিটির বৈঠকের দিকে নজর দিচ্ছেন।
Advertisement
এদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি মালয়েশিয়া সফর করে নতুন করে তাদের সঙ্গে চুক্তি করে। দেশটি থেকে বছরে ১ লাখ ৫০ হাজার শ্রমিক আনবে মালয়েশিয়া। মার্চ থেকে মালয়েশিয়াকে দক্ষ শ্রমিক দেয়ার আশ্বাস প্রদান করে ইমরান খান।
পাকিস্তানের ট্রেডস ইউনিয়ন কংগ্রেস (এমটিইউসি) বলছে, মালয়েশিয়া এবং পাকিস্তান কর্মী নিয়োগ বিষয়ে একটি চুক্তি করেছে।
পাকিস্তানের ‘দ্য নেশন’ পরিচালিত একটি প্রতিবেদনে দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়া ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা ইতোমধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে। যদিও নিয়োগের প্রক্রিয়াটি আনুষ্ঠানিকভাবে করা হয়নি’।
Advertisement
‘পাকিস্তানিদের আগমন সাধারণ মালয়েশিয়ানদের জন্যও উদ্বেগজনক এবং কমদক্ষ বিদেশিদের পক্ষে এই জাতীয় চাকরি ক্রমশ বাড়িয়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে অনেকেই।’
মালয়েশিয়ার শ্রমমন্ত্রী বলেন, ‘বারবার সহজ সরল শ্রমিকদের অসাধু নিয়োগকর্তা দ্বারা শোষণ করা হয়েছে। যারা তাদের দুর্দশার বিষয়ে নির্বিকার ছিল। বিদেশি অভিবাসীদের আর্থ-সামাজিক প্রভাব মালয়েশিয়ার জনগণকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং ২০১৮ সালের মে মাসে নতুন সরকার শপথ করার পরেও পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে’।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবারের বৈঠকে কর্মী নেয়ার ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার চাওয়াকে গুরুত্ব দেয়া হবে। এই বৈঠকেই সব সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছেন তারা।
এদিকে, প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ বলছেন, এবার অমীমাংসিত ইস্যুগুলোর সমাধান হলে দ্রুতই চূড়ান্ত বৈঠকে ঢাকায় আসবেন মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী।
Advertisement
কারিগরি বৈঠকে চূড়ান্ত হতে পারে কর্মীদের অভিবাসন ব্যয় এবং কতগুলো রিক্রুটিং এজেন্সি মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে পারবে।
এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, কর্মী নেবে মালয়েশিয়া, এক্ষেত্রে তারা কী চায় সেটিকেই অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
২০১৮ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে মালয়েশিয়ায় শ্রম রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। এরপর বাজারটি উন্মুক্ত করতে কয়েক দফা বৈঠক ও চিঠি চালাচালির পরেও বাজারটি উন্মুক্ত হয়নি। গেল বছরের ৬ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় দু’দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অনুষ্ঠিত হয়।
সম্প্রতি মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম কুলাসেগারান বলেন, বাংলাদেশ থেকে শূন্য ব্যয়ে কর্মী নিয়োগ করতে শিগগিরই চুক্তি করা হবে। নেপালের সঙ্গে যেভাবে চুক্তি হয়েছে ঠিক একইভাবে চুক্তি বাংলাদেশও চাচ্ছে।
তিনি বলেন, শূন্য ব্যয়ে কর্মী নিয়োগের বিষয়ে আলোচনা বেশ অগ্রগতি হয়েছে এবং শিগগিরই বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। কর্মী নিয়োগের সার্ভিস চার্জ, যাওয়া-আসার বিমান ভাড়া, ভিসা ফি, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, সুরক্ষা স্ক্রিনিং এবং শুল্ক চার্জগুলি দেবে নিয়োগকর্তারা।
তিনি আরও বলেন, মালয়েশিয়া অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য বাধ্যতামূলক শ্রম নির্মূল করতে এবং আমদানিকারক দেশগুলি থেকে সম্ভাব্য বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর জন্য আরেকটি শূন্য মূল্যের নিয়োগ চুক্তি প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন। প্রায় সমস্ত বিষয় নিষ্পত্তি হয়ে গেছে এবং আমরা এটি চূড়ান্ত করার খুব কাছাকাছি এসেছি।
এমআরএম/জেআইএম