দেশজুড়ে

ছেলের শরীরে করোনা, গুলি করে মারবে পুলিশ শুনেই মারা গেলেন মা!

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার রতন রপ্তান। ভারতে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। গত সোমবার দুপুরে ভারত থকে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের পাতাখালি গ্রামে নিজ বাড়িতে ফেরেন। তবে গায়ে জ্বর, সর্দি ও কাশি থাকায় ভোমরা স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশনে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর নেয়া হয় সদর হাসপাতালে।

Advertisement

এরই মধ্যে রতনের নিজ এলাকায় গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, পুলিশ রতনকে গুলি করে মেরে ফেলবে। রতনের করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। একথা শুনেই চিন্তিত হয়ে পড়েন রতনের বৃদ্ধা মা রেনুকা রপ্তান (৫৬)। রাত ১১.৪৫ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান এই বৃদ্ধা। তিনি পাতাখালি গ্রামের বিমান রপ্তানের স্ত্রী।

পদ্মপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান জানান, কিছুদিন আগে ভারতে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান রতন। সোমবার ভোমরা বন্দর দিয়ে বাড়িতে আসার সময় সর্দি, কাশি ও জ্বর থাকায় রতনকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে রক্ত নেয়ার পর রতন বাড়ি ফিরে আসে। পরে খোঁজাখুজি শুরু করে স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন।

‘শ্যামনগর স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আমাকেও ফোন করা হয়। তারা রতনের অবস্থান নিশ্চিত হতে ফোন দেন।’

Advertisement

আতাউর রহমান বলেন, এরই মধ্যে এলাকায় এক শ্রেণির মানুষ গুজব ছড়িয়ে দেয় যে, রতনের করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। পুলিশ রতনকে গুলি করে মেরে ফেলবে। এসব শুনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন রতনের মা রেনুকা। ওই রাতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।

ঘটনার বিষয়ে শ্যামনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অজয় সাহা বলেন, করোনাভাইরাস সন্দেহে রতনকে সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে কাউকে কিছু না জানিয়ে সে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে এবং পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে খোঁজাখুজি করা হয়। তবে রতনের শরীরে করোনাভাইরাসের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। এরই মধ্যে গুজবের কারণে তার মা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।

এ ব্যাপারে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার গুজবে বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে— এমন ঘটনা আমার জানা নেই।

আকরামুল ইসলাম/এমএআর/পিআর

Advertisement