মাদারীপুরের শিবচরে এসএসসিতে গণিত বিষয়ের পরীক্ষায় ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে না দেয়ার প্রতিবাদে দুই কেন্দ্রে বিক্ষোভ ও ব্যাপক ভাঙচুর করেছে পরীক্ষার্থীরা। এ সময় প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
Advertisement
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের পরীক্ষা শেষে শিবচরের নন্দকুমার মডেল ইনস্টিটিউশন ও শেখ ফজিলাতুন্নেছা সরকারি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে বিক্ষোভ ও ব্যাপক ভাঙচুর করে পরীক্ষার্থীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত গণিত বিষয়ের পরীক্ষায় ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে না দেয়ায় বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের পরীক্ষা শেষ করে প্রথমে নন্দকুমার মডেল ইনস্টিটিউশন কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা ব্যাপক ভাঙচুর ও তাণ্ডব শুরু করে। এ খবর পেয়ে পরীক্ষা শেষ করে শেখ ফজিলাতুন্নেছা পাইলট সরকারি বালিকা বিদ্যালয় ভবনে দরজা জানালা ভাঙচুর শুরু করে সেখানকার পরীক্ষার্থীরা। এক সঙ্গে দুটি স্কুলে চলে ভাঙচুর আর তাণ্ডব। নন্দকুমার মডেল ইনস্টিটিউশন কেন্দ্রের প্রায় ৩০টি কক্ষ এবং শেখ ফজিলাতুন্নেছা পাইলট সরকারি বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রায় ১০টি কক্ষের দরজা জানালা ভাঙচুর করে পরীক্ষার্থীরা। এ সময় বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষের সিসি ক্যামেরাও তারা ভেঙে ফেলে।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের এলোপাতাড়ি ভাঙচুর ও তাণ্ডবের কারণে ছোটাছুটি করতে গিয়ে প্রায় ৫০ জন সাধারণ পরীক্ষার্থী আহত হয়েছে। এ সময় পুলিশকে অনেকটা নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। কিছুক্ষণ পর স্থানীয় প্রশাসন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
Advertisement
বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা জানায়, এসএসসি পরীক্ষায় সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর পরীক্ষায় ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও মঙ্গলবার গণিত পরীক্ষায় শিবচর নন্দকুমার মডেল ইনস্টিটিউশন কেন্দ্রে ক্যালকুলেটর নিয়ে প্রবেশ করতে বাধা দেয়া হয়। যে কারণে তাদের গণিত পরীক্ষা খারাপ হয়। অপরদিকে শেখ ফজিলাতুন্নেছা সরকারিপাইলট বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে বেশ কয়েকটি কক্ষ থেকে কেন্দ্র সচিবের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের ক্যালকুলেটর নিয়ে দেয়া হয়।
অভিভাবকরা জানান, নন্দকুমার মডেল ইনস্টিটিউশন ও শেখ ফজিলাতুন্নেছা সরকারি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক প্রায় প্রতি বছরই অবৈধ সুযোগ নিয়ে তাদের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় ভালো ফলাফল দেখানোর জন্য অসুস্থ প্রতিযোগিতা করেন। ওই দুই শিক্ষকের কারণে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার হলে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্যালকুলেটর ছাড়া পরীক্ষার হলে ঢুকে অনেক শিক্ষার্থী প্রায় আধা ঘণ্টা পর্যন্ত কান্নাকাটি করেছে।
এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র সচিব মো. রফিকুল ইসলাম জানান, গতকাল নন্দকুমার মডেল ইনস্টিটিউশন কেন্দ্রে ক্যালকুলেটর নিয়ে প্রবেশে বাধা দেয়া হয়। প্রতিবাদে বুধবার প্রথমে নন্দকুমার মডেল ইনস্টিটিউশন কেন্দ্রে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ভাঙচুর চালায়। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শেখ ফজিলাতুন্নেছা সরকারি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রেও ভাঙচুর চালায়। আজ শেখ ফজিলাতুন্নেছা সরকারি পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ে এক হাজার ১০২ জন শিক্ষার্থী ও নন্দকুমার মডেল ইনস্টিটিউশন কেন্দ্রে ৯৮০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আসাদুজ্জামান জানান, গতকাল এসএসসির সাধারণ গণিত বিষয়ের পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের ক্যালকুলেটর নিয়ে হলে প্রবেশে বাধা দেয়া হয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা বুধবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পরীক্ষা শেষে উত্তেজিত হয়ে দুই কেন্দ্রে ভাঙচুর করে। বর্তমানে পরিস্থিতে নিয়ন্ত্রণে আছে।
Advertisement
একে এম নাসিরুল হক/আরএআর/এমএস