আন্তর্জাতিক

মৃত্যুর পথে বাবা, হাসপাতালেই বিয়ে করলেন মেয়ে

দীর্ঘ ৯ বছরে ধরে ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধ করে শেষ পর্যায়ে চলে এসেছেন ৬১ বছরের সন্দীপকুমার সরকার। তবে তার শেষ ইচ্ছা, মেয়ের বিয়ে দেখা। অবশেষে তার ইচ্ছা মতোই তারিখ এগিয়ে এনে হাসপাতালেই দেয়া হলো মেয়ের বিয়ে।

Advertisement

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ভারতের হাওড়ার এক হাসপাতালে ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে শেষ পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়া বাবার সামনেই সরকারি মতে তার বিয়ে সম্পন্ন হয়। হাসপাতালের কক্ষে সব কিছুর ব্যবস্থা করেছিল ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই।

মরণব্যাধি ক্যানসারে আক্রান্ত ৬১ বছরের সন্দীপকুমার সরকারের শারীরিক সমস্যা বেড়েই চলছিল। বিয়ের দিনও অক্সিজেন নিতে পারছিলেন না তিনি। তবে হাল ছাড়েননি রেলের অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার সন্দীপবাবু। সকলের উৎকণ্ঠার মধ্যেই বিয়ের কাজটুকু শেষ হয়েছে।

২০১১ সাল থেকে জিভের ক্যানসারে আক্রান্ত হন সন্দীপকুমার। মুম্বাইয়ের একটি ক্যানসার হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। বর্তমানে হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অপরাজেয় সন্দীপবাবু শেষ পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে দিয়ে কেক কেটে অতিথিদের মুখে কেকের টুকরোও তুলে দেন। এরপর সন্ধ্যায় তার অস্ত্রোপচার করা হয়।

Advertisement

সন্দীপবাবুর মেয়ে দিওতিমা রাজাবাজার সায়েন্স কলেজে শারীরবিদ্যা নিয়ে গবেষণা করছেন। তাকে বিয়ে করেন একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে চাকরি করা সুদীপ্ত কুণ্ডুর। বিয়ে শেষে সন্দীপবাবুর মেয়ে বলেন, ‘অদ্ভুত অনুভূতি। আমাদের নতুন জীবন শুরু হলো অথচ বাবার জীবন শেষের পথে। চিকিৎসায় আর সাড়া দিচ্ছেন না। শুধু আমাদের একসঙ্গে দেখার অপেক্ষায় মনের জোরে লড়াই করছেন। বাবার ইচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের জন্য সফল হয়েছে।’

জামাই সুদীপ্ত বলছেন, ‘কয়েক বছর ধরে তার লড়াই দেখছি। এমন মনের জোর কারও দেখিনি। হাসপাতাল থেকে বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার ইচ্ছার কথাও জানিয়েছেন।’

সন্দীপবাবুর জীবনসঙ্গী সুজাতাদেবী বলেছেন, ‘জানতাম উনি পারবেন, পেরেছেন।’

সূত্র : আনন্দবাজার

Advertisement

আরএস/এমকেএইচ