নভেল করোনাভাইরাসে প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। অত্যন্ত সংক্রামক হওয়ায় মানুষ থেকে মানুষে সহজেই ছড়িয়ে পড়ছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। ধারণা করা হচ্ছে, আক্রান্ত রোগীর হাঁচি-কাশি বা নিশ্বাস থেকে বাতাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে ২০১৯-এনসিওভি। সেভাবে টয়লেটের পাইপের মাধ্যমেও এটি ছড়াতে পারে- এমন আশঙ্কায় হংকংয়ের একটি আবাসিক ভবন খালি করা হচ্ছে। সিং ই এলাকার হং মেই হাউস নামে ওই ভবনটির দু’জন বাসিন্দার শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়ার পর এ নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
Advertisement
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে হংকংয়ের খ্যাতিমান চিকিৎসক প্রফেসর কে ওয়াই ইউয়েন বলেন, মল অপসারণের পাইপলাইন এয়ার পাইপের সঙ্গে যুক্ত থাকায় এটা খুবই সম্ভব যে, মলের সঙ্গে থাকা ভাইরাস টয়লেটের ফ্যানের মাধ্যমে ছড়াচ্ছে। একারণে অতিরিক্ত সতর্কতাস্বরূপ ভবনটির কিছু অংশ খালি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীরা জায়গাটি পরীক্ষা করছেন।
তিনি জানান, ভাইরাস সংক্রমণের রাস্তা কোনটি তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। একারণে ভবনের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়া অব্যাহত রয়েছে।
চীনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হংকংয়ে এখন পর্যন্ত ৪২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। এর মধ্যে ১২তম ও ৪২তম রোগী হং মেই হাউসের বাসিন্দা।
Advertisement
চীনে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে এক হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। সোমবার একদিনে আরও শতাধিক মারা যাওয়ায় দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৬ জন। গত ৩১ ডিসেম্বর প্রথমবার শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এটাই একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর নতুন রেকর্ড।
মঙ্গলবার চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, সোমবার মধ্যরাত পর্যন্ত দেশটির মূল ভূখণ্ডে অন্তত ২ হাজার ৪৭৮ জন নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, এর মধ্যে হুবেই প্রদেশেই রয়েছেন ২ হাজার ৯৭ জন। ফলে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৬৩৮ জন।
আক্রান্তের সংখ্যার দিক থেকে অনেক আগেই সার্স (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) ভাইরাসকে ছাড়িয়ে গেছে করোনাভাইরাস। ২০০২-০৩ সালে আট মাসের মধ্যে ২৫টি দেশে সার্স ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৮ হাজার ৯৮ জন এবং প্রাণ হারিয়েছিলেন ৭৭৪ জন। চীনের উহান থেকে ছড়ানো করোনাভাইরাস ইতোমধ্যে অন্তত ২৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে চীন ছাড়া হংকং ও ফিলিপাইনে দু'জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
সূত্র: সিএনএন
Advertisement
কেএএ/জেআইএম