আন্তর্জাতিক

সার্সের মতো করোনাভাইরাস সংকটেও ঘুরে দাঁড়াবে বিশ্ববাজার!

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রায় দুই দশক আগে বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল সার্স (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম) ভাইরাস। ওই মহামারিতে ২৪টিরও বেশি দেশে মোট ৭৭৪ জনের মৃত্যু হয়, আক্রান্ত হন ৮ হাজার ৯৮ জন। এবারের নভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমণের হার এর কয়েকগুণ বেশি। এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৯১০ জন, আক্রান্ত ৪০ হাজারেরও বেশি। মৃত-আক্রান্তদের সিংহভাগই চীনে।

Advertisement

২০০২-০৩ সালে সার্স ভাইরাসের উৎসও ছিল চীন। সেসময় ভাইরাস আতঙ্কের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল বিশ্ব অর্থনীতিতে। তবে সার্স মহামারির পর থেকেই দ্রুত বাড়তে থাকে চীনের অর্থনৈতিক গুরুত্ব। সেসময় বৈশ্বিক জিডিপির মাত্র চার শতাংশ ছিল চীনের অবদান, যা বর্তমানে ১৬ শতাংশেরও বেশি। বিশ্বের বড় বড় কল-কারখানা চীনে, তৈরি হচ্ছে আইফোনের মতো প্রযুক্তিপণ্য। গাড়ির যন্ত্রাংশ, তেল-লোহার মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসেরও অন্যতম উৎপাদক ও ব্যবহারকারী হয়ে উঠেছে দেশটি। বিশ্বের কোটি কোটি ধনীর আকাঙ্ক্ষিত অসংখ্য বিলাসবহুল পণ্যের প্রস্তুতকারকও তারা। বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বায়নের ফলে এখনকার বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের সীমানা পেয়ে আন্তর্জাতিক সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করেছে। এতে বিশ্ব অর্থনীতি আরও বেশি পরস্পরসংযুক্ত হয়ে উঠেছে। ২০০৮ সালের আর্থিক সঙ্কটের পর থেকেই প্রধান কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো অর্থনৈতিক মন্দার বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়ছে। এরপর থেকে বৈশ্বিক ঋণের মাত্রা আর কখনোই বাড়েনি।

অর্থনৈতিক গবেষণা ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের গ্রুপ চিফ ইকোনমিস্ট নিল শিয়ারিং বলেন, এবারের (করোনাভাইরাস) প্রাদুর্ভাব গুরুতর অর্থনৈতিক ও বাজার সংকট তৈরি করতে সক্ষম। যদিও এর প্রভাবের মাত্রা নির্ধারিত হবে ভাইরাসটি কীভাবে ছড়াচ্ছে এবং বিকশিত হচ্ছে তার ওপর, যা আন্দাজ করা প্রায় অসম্ভব। এছাড়া সরকার কী ব্যবস্থা নিচ্ছে তার ওপরও এটি যথেষ্ট নির্ভরশীল।

Advertisement

নভেল করোনাভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক বাড়লেও এর মধ্যেই গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজার একাধিকবার সর্বোচ্চ সূচকের রেকর্ড গড়েছে, যার ধারা শেষ হয়েছে তিন শতাংশ বৃদ্ধি দিয়েছে। এসময় এসঅ্যান্ডপি ৫০০-এর সূচক বেড়েছে প্রায় তিন দশমিক দুই শতাংশ।

করোনাভাইরাস সংকট প্রসঙ্গে বিশ্লেষকরা বলছেন, উদীয়মান জাতীয়তাবাদ বিশ্বব্যাপী সমন্বিত ব্যবস্থা চালু করাকে আরও কঠিন করে তুলতে পারে। তবে সার্স মহামারির মতো করোনাভাইরাস সংকটেও বিশ্ব অর্থনীতি দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবে বলে বিশ্বাস তাদের।

কেএএ/পিআর

Advertisement