খেলায় হার-জিত আছে। এক দল হারবে, আরেক দল জিতবে এটাই স্বাভাবিক। আর ক্রিকেটকে বলা হয় ভদ্রলোকের খেলা। এখানে ট্রফি হাতছাড়া হলেও মেজাজ গরম করতে দেখা যায় না খেলোয়াড়দের, হতাশা যতই গ্রাস করুক। বরং খেলার পর দুই দলের করমর্দন খুব স্বাভাবিক ঘটনা।
Advertisement
তবে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনাল হারের পর ভদ্রলোকের খেলায় ভদ্রতাটা বজায় রাখতে পারলো না ভারত। প্রতিপক্ষের উদযাপন সহ্য করতে না পেরে মেজাজ হারিয়ে ভারতীয় একজন খেলোয়াড় বাংলাদেশের এক খেলোয়াড়ের কাছ থেকে কেড়ে নেন লাল-সবুজের পতাকা।
বাংলাদেশ-ভারত ক্রিকেট লড়াই তো এখন এশিয়ার সবচেয়ে রোমাঞ্চকর লড়াই। ছোটদের ক্রিকেটেও এর ব্যতিক্রম নয়। এই তো মাস কয়েক আগে এশিয়া কাপের ফাইনালে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলো দুই দলের। একটুর জন্য এশিয়া কাপের শিরোপা হাতে নিতে পারেনি যুব টাইগাররা।
ভারতকে ১০৬ রানেই গুটিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশের বোলাররা। একটা সময় সহজ জয়ের পথে ছিল। কিন্তু শেষ দিকে বেশ কয়েকটি উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায়। শেষতক ১০১ রানেই থামে বাংলাদেশের ইনিংস। ৫ রানের জন্য হাতছাড়া হয় শিরোপা।
Advertisement
তবে বিশ্বকাপ ফাইনালের মতো বড় মঞ্চে এবার আর ভুল করেনি বাংলাদেশ। ভারতকে এবারও মাত্র ১৭৭ রানে গুটিয়ে দেয় যুব টাইগাররা। জবাবে ১৪৩ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফের স্বপ্নভঙ্গের শঙ্কায় পড়লেও শেষ পর্যন্ত ৩ উইকেটের জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ।
তবে পুরো ম্যাচ জুড়েই দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে একটা আলাদা উত্তেজনা লক্ষ্য করা গেছে। বাংলাদেশ যখন বোলিং করছিল, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ছিল ভীষণ আক্রমণাত্মক। ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা পরাস্ত হলে বল ধরে থ্রো করা বা টুকটাক স্লেজিং করেছেন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। আউট হওয়ার পর 'পকেটে কিছু ঢুকিয়ে নেয়া'র মতো উদযাপন করেছেন বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা।
বাংলাদেশ যখন ব্যাটিংয়ে নেমেছে ভারতীয়ও কম যায়নি। বল মিস করলেও ব্যাটসম্যানের সামনে গিয়ে স্লেজিং করেছে ভারতীয়রা। পুরো ম্যাচে এমনটাই চলেছে।
তবে মাঠের ঘটনা তো খেলা চলার সময়ই মানায়, এর বাইরে চলে গেলে সেটাকে আর পেশাদারিত্ব বলা যায় না। ম্যাচের পর ভারতীয় খেলোয়াড়রা বোধ হয় সেটা ভুলে গিয়েছিলেন।
Advertisement
প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল, তাদের উদযাপন তো বাধভাঙা হবেই। কিন্তু ভারতীয় খেলোয়াড়রা সেটা মেনে নিতে পারেননি। মেজাজ হারিয়ে পতাকা কেড়ে নেন এক খেলোয়াড়। ম্যাচের পরপরই ভারতীয়রা ভদ্রতাসূচক করমর্দনও করেননি। পরে অবশ্য পরিস্থিতি ঠান্ডা হলে আনুষ্ঠানিকতা মেনে করমর্দন করেন তারা।
এমএমআর/এসএএস