স্বাস্থ্য

যাত্রী স্ক্রিনিংয়ে এখনও হ্যান্ডহেল্ড ইনফ্রারেড থার্মোমিটারই ভরসা

দেশে নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশের সকল আকাশ, স্থল, নৌ ও সমুদ্রবন্দরে আগত যাত্রীদের হেলথ স্ক্রিনিংয়ে সরকারি ঘোষণা দেয়া হলেও হাজার হাজার যাত্রীর স্ক্রিনিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক থার্মাল স্ক্যানার নেই। বর্তমানে সারাদেশের মধ্যে শুধুমাত্র হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনটি থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে যাত্রীদের স্ক্রিনিং হচ্ছে। এছাড়া অন্য সকল সীমান্তপথে হ্যান্ডহেল্ড ইনফ্রারেড থার্মোমিটারই ভরসা।

Advertisement

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে অধিকতর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ১২টি থার্মাল স্ক্যানার (জ্বর পরিমাপের মেশিন) কেনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত বাজেট থেকে সন্ট্রাল মেডিসিন স্টোর ডিপোর্টের (সিএমএসডি) মাধ্যমে ২টি থার্মাল স্ক্যানার কেনার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।

এছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ অর্থবরাদ্দ থেকে আরও ১০টি থার্মাল স্ক্যানার কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রতিটি মেশিনের দাম পড়বে ৩৫ লাখ টাকা।

সরকারি ক্রয়-নীতিমালা অনুসারে দরপত্র আহ্বানসহ বিভিন্ন নীতিমালায় থার্মাল স্ক্যানার কেনা বেশ জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়ার হওয়ায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দ্রুত ও সহজে ১০টি থার্মাল স্ক্যানার ক্রয়ের ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বিশ্ব ব্যাংকের কাছে সহায়তা চেয়েছে। তবে কবে নাগাদ থার্মাল স্ক্যানার দেশে পৌঁছাবে সে ব্যাপারে তাদের কাছ থেকে এখনও পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি।

Advertisement

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের কাছে ১২টি থার্মাল স্ক্যানার মেশিন ক্রয়ের উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে অধিকতর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সকল বিমান, নৌ, সমুদ্র ও স্থল বন্দর দিয়ে আগত সকল যাত্রীর স্ক্রিনিং শুরু হয়েছে। বর্তমানে শুধুমাত্র শাহজালাল আন্তজার্তিক বিমানবন্দরে তিনটি থার্মাল স্ক্যানার রয়েছে। দ্রুততম সময়ে যেন দেশের বিভিন্ন প্রবেশপথে বেশি সংখ্যক মানুষকে স্ক্রিনিং করা যায়, সেজন্য থার্মাল স্ক্যানার কেনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, জ্বরের রোগী চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে থার্মাল স্ক্যানারের চেয়ে হ্যান্ডহেল্ড ইনফ্রারেড থার্মোমিটারের মাধ্যমে চিহ্নিত করার কার্যকারিতা কোনো অংশেই কম নয়। তবে থার্মাল স্ক্যানারের সুবিধা হলো একসঙ্গে অনেক যাত্রীকে স্ক্রিনিং করা যায়। আর হ্যান্ডহেল্ড ইনফ্রারেড থার্মোমিটারের মাধ্যমে একজন যাত্রীর কপালের কাছে ধরলেই তার জ্বর আছে কি না তা ধরা পড়ে। এটি দামেও সস্তা। প্রতিটির দাম মাত্র ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা। বর্তমান প্রেক্ষাপটে ১০০ ডিগ্রি ফারেনফাইটের বেশি জ্বর থাকলে তাকে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইন করে রাখার কথা বলা হয়েছে।

জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন সীমান্ত প্রবেশপথে স্ক্রিনিংয়ের কথা বলা হলেও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়া অন্য কোথাও এ মেশিন কার্যকর নেই। শাহজালালে বর্তমানে ৩টি থার্মাল স্কানার ও ৬টি হ্যান্ডহেল্ড ইনফ্রারেড থার্মোমিটার দিয়ে স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে একটি মেশিন থাকলেও তা অকার্যকর হয়ে পড়ে আছে।

উল্লেখ্য, শুধুমাত্র হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়েই প্রতিদিন ২৫টি ফ্লাইটে সাড়ে ১২ হাজার যাত্রী আসছেন।

Advertisement

এমইউ/এসআর/পিআর