বাবর আজম আউট হতে পারতেন মাত্র ৩ রানে। তার ইনিংসের শুরুতেই সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেন এবাদত হোসেন। সেই জীবন পেয়ে এখনও পর্যন্ত আরও ১৪০ রান যোগ করেছেন পাকিস্তানের সেরা ব্যাটসম্যান। অপরাজিত থেকে দলের লিডকে পার করিয়েছেন ১০০ রানের গণ্ডি। বাবরের ক্যারিয়ার সেরা টেস্ট ইনিংসেই বাংলাদেশের করা ২৩৩ ছাড়িয়ে ছুটছে পাকিস্তান।
Advertisement
রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৩৪২ রান। এরই মধ্যে স্বাগতিকদের লিড দাঁড়িয়েছে ১০৯ রানের। তৃতীয় দিনে এটি কোথায় গিয়ে থামে সেটিই দেখা বিষয়। বোলাররা দারুণ কিছু করে দেখাতে না পারলে, টানা তৃতীয় ম্যাচে ইনিংস পরাজয়ই চোখ রাঙানি দেবে টাইগারদের।
আজ (শনিবার) বাংলাদেশের বোলারদের পাড়ার বোলার বানিয়ে সহজেই রান তুলেছেন বাবর আজম, শান মাসুদ, আসাদ শফিকরা। সেঞ্চুরি করেছেন বাবর ও শান, একই পথে হাঁটছেন আসাদ শফিকও। চতুর্থ উইকেটে ১৩৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়া বাবর ১৪৩ ও আসাদ ৬০ রানে অপরাজিত রয়েছেন। শান আউট হয়েছেন ঠিক ১০০ রান করে।
অথচ দ্বিতীয় দিনের শুরুটা ছিলো বাংলাদেশেরই পক্ষে। পাকিস্তান ইনিংসের প্রথম ওভারে এবাদত হোসেনের হাতে বল তুলে দেন টাইগার অধিনায়ক মুমিনুল হক। ডানহাতি পেসারের ওই ওভারে মাত্র এক রান নিতে পারে স্বাগতিকরা। ওই এক রানও আসে লেগ বাই থেকে।
Advertisement
দ্বিতীয় ওভারে এসেই সাফল্য পান আবু জায়েদ রাহী। ওভারের দ্বিতীয় ডেলিভারিতে তিনি ফিরিয়ে দেন দুই টেস্টের ক্যারিয়ারে দুই সেঞ্চুরি করা পাকিস্তানি ওপেনার আবিদ আলিকে।
রাহীর বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিটি শরীরের বাইরে খেলতে গিয়ে শূন্য রানে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন আবিদ। চোখের পলকে সেই বল গ্লাভসবন্দী করে নেন উইকেটরক্ষক লিটন দাস। পাকিস্তানের বোর্ডে তখন মাত্র ২ রান।
তবে এমন শুরুর পরও পাকিস্তানকে চেপে ধরতে পারেননি টাইগার বোলাররা। দ্বিতীয় উইকেটে ৯১ রানের বড় জুটি গড়েন আজহার আলি আর হারিস সোহেল। শেষতক এই জুটিটাও ভাঙেন রাহিই।
ইনিংসের ২৩তম ওভারে টাইগার পেসারের দারুণ এক ডেলিভারিতে ব্যাট চালিয়ে স্লিপে ক্যাচ হন পাকিস্তানি অধিনায়ক আজহার। ৫৯ বলে ৪ বাউন্ডারিতে তিনি করেন ৩৪ রান। ২ উইকেটে ৯৫ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় পাকিস্তান। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি স্বাগতিকদের। এর সঙ্গে সফরকারীদের উদারতা তাদের কাজ আরও সহজ করে দেয়।
Advertisement
স্বাগতিকদের ইনিংসের ৪৫তম ওভারে ৮৬ রানে ব্যাট করছিলেন শান মাসুদ। অফস্টাম্পের বেশ বাইরের এক ডেলিভারিতে অলস ভঙ্গিতে ড্রাইভ করতে যান তিনি। কিন্তু সেটি ঠিকভাবে ব্যাটে লাগাতে পারেননি। তবে ব্যাটের বাইরের কানায় লেগেছিল ঠিকই। সেটি আবার একদমই বুঝতে পারেননি রুবেল কিংবা লিটন। দুজনের কেউই আবেদন করেননি। যার ফলে কট বিহাইন্ড হয়েও বেঁচে যান শান।
এই ঘটনার ৮ ওভার পরে রুবেল হোসেনের বলেই ফাইন লেগে চালিয়ে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে সেঞ্চুরি তুলে নেন বাঁহাতি এ ওপেনার। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটি তার তৃতীয় সেঞ্চুরি। পরের ওভারেই তাইজুলের ভেতরে ঢোকা এক ডেলিভারিতে অলসভাবে ডিফেন্স করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান শান। ভেঙে যায় শান-বাবরের ১১২ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।
শান ফিরলেও চা পানের বিরতি পর্যন্ত নিজের উইকেট বাঁচিয়ে রাখেন বাবর। পরে আর আউটই হননি তিনি। অথচ ব্যক্তিগত মাত্র ৩ রানের সময় লংঅফে ক্যাচ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেটি ফেলে দেন এবাদত। জীবন পেয়ে চা পানের বিরতির আগেই বাবর তুলে নেন ক্যারিয়ারের ১৪তম হাফসেঞ্চুরি। যেটিকে রূপ দেন পঞ্চম টেস্ট সেঞ্চুরিতে।
দিন শেষে বাবর ছাড়িয়ে গেছেন তার আগের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১২৭ রানের সংগ্রহকে। পঞ্চম সেঞ্চুরি করা বাবর এখন অপরাজিত রয়েছেন ১৪৩ রানে। আর ত্রয়োদশ সেঞ্চুরির অপেক্ষায় থাকা আসাদের সংগ্রহ ৬০ রান।
এসএএস/এমকেএইচ