হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে প্রতিদিন ২৫টি ফ্লাইটে গড়ে সাড়ে ১২ হাজার যাত্রী বাংলাদেশে আসছে। এর মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে মাত্র চারটি ফ্লাইটে আসা চীনফেরত ৭০০ যাত্রীর যথাযথ স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও মনিটর করত স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে এখন থেকে আগত সব যাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
Advertisement
বিমানবন্দরে কর্তব্যরত স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা এতদিন চায়না ইস্টার্ন, চায়না সাউদার্ন, ড্রাগন এয়ার ও ইউএস-বাংলায় চীন থেকে আগত প্রত্যেক যাত্রীকে ফ্লাইটের কেবিন ক্রুদের মাধ্যমে মেডিকেল ডিক্লারেশন ফর্ম, স্বাস্থ্য তথ্য কার্ড ও প্যাসেঞ্জার লোকেটর ফরম বিতরণ করত।
এছাড়া বিমানবন্দরে নামার পর ফ্লাইটের যাত্রীদের কাছ থেকে তারা এসব ফরম সংগ্রহ করত এবং থার্মাল স্ক্যানার ও হ্যান্ড স্ক্যানার দিয়ে যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হতো। মাত্র চারটি ফ্লাইটের যাত্রীরা এর আওতায় থাকায় সিংহভাগ যাত্রীই স্বাস্থ্য পরীক্ষার বাইরে থেকে গেছেন। তাদের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন রোগতত্ত্ববিদরা।
চীন থেকে সরাসরি চারটি ফ্লাইটে যাত্রী এলেও বর্তমানে দৈনিক ১৩টি ফ্লাইটে চীনাসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা বাংলাদেশে আসছেন। প্রতিবেশী দেশ ভারত, নেপাল, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের ফ্লাইটেও চীনা নাগরিকরা ঢাকা আসছেন।
Advertisement
এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এখন থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগত সব যাত্রীকেই মনিটর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিমানবন্দরে কর্মরত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ জানান, ২১ জানুয়ারি চীন থেকে আগত চারটি ফ্লাইটের যাত্রীদের মাঝে মেডিকেল ডিক্লারেশন ফর্ম, স্বাস্থ্য তথ্য কার্ড ও প্যাসেঞ্জার লোকেটর ফরম বিতরণের কাজ চলছিল। তারা নিবিড় পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন, চারটি নয়, ১৩টি ফ্লাইটে চীনাসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক আসছেন।
তিনি আরও জানান, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে প্রতিদিন ২৫টি ফ্লাইটে সাড়ে ১২ হাজার যাত্রী বাংলাদেশে আসেন। বৈশ্বিক করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় অধিকতর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে রোগতত্ত্ববিদদের পরামর্শে এখন থেকে ২৫টি ফ্লাইটে আগত সব যাত্রীদের মনিটর করা হবে।
এদিকে কিছুদিন ধরে সব যাত্রীকে থার্মাল স্ক্যানার ও হ্যান্ড স্ক্যানারে জ্বর পরীক্ষা করা হলেও তাদের প্রত্যেককে মেডিকেল ডিক্লারেশন ফর্ম, স্বাস্থ্য তথ্য কার্ড ও প্যাসেঞ্জার লোকেটর ফরম পূরণ করতে হয়নি। তবে এখন থেকে সব যাত্রীর কাছ থেকে এ তিনটি কার্ডে তথ্য সংগ্রহ করা হবে বলে জানান তিনি।
গত ২১ জানুয়ারি থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) পর্যন্ত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মোট ৮ হাজার ৩৯৬ জনের হেলথ স্ক্রিনিং করা হয়েছে। এ সময়ে আইইডিসিআর’র ল্যাবরেটরিতে ৫৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কাউকে পাওয়া যায়নি।
Advertisement
এমইউ/আরএস/এমএস