করোনাভাইরাস বহনকারীর শরীরে রোগের লক্ষণ দেখা দিলেই এই ভাইরাস অন্যের শরীরে প্রবেশের সম্ভাবনা থাকবে অর্থাৎ ছোঁয়াচে হবে। এর আগে একজনের শরীর থেকে আরেকজনের শরীরে ছড়াবে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডাক্তার মির্জা দে সাবরিনা ফ্লোরা।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে আইইডিসিআর সম্মেলনকক্ষে দেশে করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি সম্পর্কে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, 'এর আগে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন যে, লক্ষণ দেখা দেয়ার আগে এ ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি অন্য মানুষের দেহে ভাইরাস ছড়াতে পারে। কিন্তু সর্বশেষ বৈজ্ঞানিক গবেষণা সে ধারণাকে বদলে দিয়েছে।'
আইইডিসিআর পরিচালক স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গতকাল ৫ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের একটি দল আশকোনা কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। তারা উহান ফেরত কোয়ারএন্টাইনকৃত যাত্রীদের স্বাস্থ্যসেবা ও অন্যান্য সেবার ব্যবস্থাপনা দেখে বিভিন্ন পরামর্শ দেন। সার্বিক পরিস্থিতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা।
Advertisement
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে তিন বছরের একটি শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ায় তার বাবা-মাসহ তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তার শরীরে করোনাভাইরাস রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
বর্তমানে আশকোনার কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৩০০ জন, কুর্মিটোলা হাসপাতালের একজন ও সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ১১ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সর্বশেষ পরিস্থিতি উল্লেখ করে বলা হয়, এ পর্যন্ত বিমানবন্দরে চীন থেকে আগত স্ক্রিনিংকৃত যাত্রীর সংখ্যা ৭ হাজার ৬৯৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় এসেছে ৪০৯ জন। আজ পর্যন্ত মোট ৫০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষায় এখনো পর্যন্ত কারও দেহে কোনো ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। মহামারির আশঙ্কায় বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যেই চীন থেকে নিজ দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে। মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত অর্থাৎ ছোঁয়াচে হওয়া এ ভাইরাস ঠেকাতে চীন ভ্রমণে কড়াকড়ি আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপানসহ বেশ কয়েকটি দেশ।
Advertisement
এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে দেশটির হুবেই প্রদেশে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৪৯ জনে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হুবেই প্রদেশে ১৪ হাজার ৩১৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাদের মধ্যে ৭৫৬ জনের অবস্থা গুরুতর।
এমইউ/এফআর/এমকেএইচ