আন্তর্জাতিক

কাছে যাওয়ার সুযোগ নেই, দূর থেকে মেয়েকে উড়ন্ত আলিঙ্গন চীনা নার্সের

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ছোবলে চীনে এ পর্যন্ত ৫৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার মারা গেছেন অন্তত ৭০ জন। দেশটিতে নতুন করে আরও ২ হাজার ৯৮৭ জনসহ মোট ২৭ হাজার ৩৭৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। বিশ্বের ২৮টি দেশ ও অঞ্চলে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে।

Advertisement

আক্রান্তদের থেকে যাতে অন্যরা আক্রান্ত না হতে পারে, সেজন্য আক্রান্তদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। চিকিৎসা কাজে নিয়োজিত চিকিৎসক ও নার্সদেরও পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে।

চীনের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ হুবেইয়ের রাজধানী শহর উহান থেকেই প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের উৎপত্তি, যা এখন গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। এই শহরে হাজার হাজার করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসাসেবা যারা দিচ্ছেন, তারা ঠিকমতো খাওয়া কিংবা ঘুমানোর সময়টুকুও পাচ্ছেন না।

সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ হওয়া কিছু ছবিতে দেখা যাচ্ছে, চিকিৎসক-নার্সদের চোখেমুখে ক্লান্তির ছাপ। টানা মাস্ক পরে থাকায় তাদের চেহারাটাই যেন পাল্টে গেছে। চামড়ায় ভাজ পড়ে গেছে। আয়নায় নিজের এ রকম চেহারা দেখে কাঁদছেন তাদের কেউ কেউ।

Advertisement

তবে সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও ফুটেজ সবার হৃদয়কে স্পর্শ করেছে। ৪৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন নার্সকে দেখতে এসেছেন তার ৯ বছরের মেয়ে ও তার স্বামী। যেকেতু কাছে যাওয়ার সুযোগ নেই, তাই হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে মেয়ে ও স্বামীর সঙ্গে কথোপকথন হচ্ছে তার।

মেয়েকে বলতে শোনা যায়, ‘মা তুমি দ্রুত আমাদের মাঝে ফিরে এসো। তোমাকে ছেড়ে থাকতে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে।’ মেয়ের কথা শুনে কর্তব্যনিষ্ঠ মা বলছেন, ‘মা, আমরা এখানে দানবের (করোনাভাইরাস) সঙ্গে লড়াই করছি। এ লড়াইয়ে জয়ী হয়েই তবে আমি তোমাদের মাঝে ফিরব।’

ভিডিওর এক পর্যায়ে মা ও মেয়েকে উড়ন্ত আলিঙ্গন করতে দেখা যায়। পরে মেয়ে মায়ের জন্য বক্সে আনা কিছু খাবার মাটিতে রেখে যায়।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ঘটনাটি উহান শহরের একটি হাসপাতালের সামনে ধারণ করা। ওই নার্সের নাম লিউ হাইয়ান। তার ৯ বছরের মেয়ের নাম চেং শিওয়েন। উহান শহরে করোনাভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করলে গত মাসে ৩৯ জন স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে শহরের ফুগোউ কান্ট্রি পিপলস হাসপাতালে তাকে ডেকে নেয়া হয়।

Advertisement

হাসপাতালে যাওয়ার ১০ দিন পরে গত ৩১ জানুয়ারি তিনি তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পান। তবে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখেই তাদের মধ্যে কথোপকথন হয়েছে।

এসআর/এমকেএইচ