ছবিগুলো দেখলে বেশি কিছু বলার প্রয়োজন হয়তো নেই। চীনের উহান শহরের চিকিৎসক ও নার্সসহ হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট কর্মীদের মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না। দীর্ঘ সময় মাস্ক পরে ক্লান্ত শরীরে রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে সবার মুখে দেখা যাচ্ছে ছোপ ছোপ দাগ। ঘুমাতে না পেরে অনেক চিকিৎসককে হাসপাতালে কাঁদতেও দেখা গেছে।
Advertisement
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, চীনের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ হুবেইয়ের রাজধানী শহর উহান। এখান থেকেই প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের উৎপত্তি, যা এখন গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। এই শহরে হাজার হাজার করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসাসেবা যারা দিচ্ছেন, তারা ঠিকমতো খাওয়া কিংবা ঘুমানোর সময়টুকুও পাচ্ছেন না।
হাসপাতালগুলোর কর্মীরা সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, বেশিরভাগ কর্মী মারাত্মক ক্লান্ত। হাসপাতালের চেয়ারে ঘুমিয়েই বিশ্রাম নিতে হচ্ছে তাদের। আর সেই বিশ্রামও স্বল্প সময়ের। তা শেষ না হতেই আবার নতুন করে কাজ করতে হচ্ছে। অনিদ্রা আর টানা পরিশ্রমের কারণে অবসাদগ্রস্ত অনেকে চেয়ারে বসেই অঝোরে কাঁদছেন।
ব্রিটিশ দৈনিক ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ডাক্তার-নার্সসহ হাসপাতালে রোগীদের যারা সেবা দিচ্ছেন, তাদের অনেকে এতটাই ব্যস্ত যে টয়লেটে পর্যন্ত যাওয়ার সময় পাচ্ছেন না। তার ওপর ভাইরাসটির সংক্রমণ ঠেকাতে সার্বক্ষণিক ফেসমাস্ক, চশমা আর সুরক্ষিত পোশাকসহ নানা কিছু দিয়ে শরীরে মুড়িয়ে রাখতে হচ্ছে তাদের।
Advertisement
উল্লিখিত এসব বিষয় ছাড়াও প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ নতুন করে ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। অনেকে মারা যাচ্ছেন, যা তাদের মানসিক ও আবেগীয় সত্ত্বাকেও নাড়া দিচ্ছে। এদিকে দীর্ঘ সময় মাস্ক আর সুরক্ষিত এসব পোশাকের কারণে তাদের মুখে ও শরীরে ফোসকা, ঘাসহ নানা ধরনের দাগ দেখা দিয়েছে।
এক ছবিতে দেখা যাচ্ছে, হাসপাতালের তরুণ নারী ও পুরুষ কর্মীদেরও অনেকে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। তাদের সবার মুখে ছোটবড় গর্ত তৈরি হয়েছে। দীর্ঘ সময় মাস্ক পরে থাকার কারণে তাদের এই হাল হয়েছে। ফোসকা পড়েছে মুখে। অনেকের অবস্থা এমন যে, তারা চোখ খুলে তাকাতেও পারছেন না ঠিকমতো।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় চীনে আরও ৬৫ জন মারা গেছেন। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯২ জনে। মঙ্গলবার চীনে নতুন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৩ হাজার ৮৮৭ জন। শেষ হিসাব পাওয়া পর্যন্ত চীনে প্রতিষেধকবিহীন এই ভাইরাসে ২৪ হাজার ৩২৪ জন আক্রান্ত হলেন।
এসএ/এমএস
Advertisement