আন্তর্জাতিক

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে : ডব্লিউএইচও

বিশ্বে চীনের প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটির মহাপরিচালক বলেছেন, চীনের নেয়া নাটকীয় পদক্ষেপের ফলে এর বিস্তার রোধের এই সুযোগ তৈরি হয়েছে।

Advertisement

এই ভাইরাসে চীনে এখন পর্যন্ত ৪৯০ জন নিহত ও আরও ২৪ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন।চীনের বাইরে হংকং এবং ফিলিপাইনে একজন করে মারা গেছেন। প্রাদুর্ভাবের শুরুর দিকে দেশটির ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট সরকার পরিস্থিতি মোকাবেলায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ উঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার নিজেদের দুর্বলতার কথাও স্বীকার করে চীনের ক্ষমতাসীন সরকার।

বিশ্বের ২০টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় জাতিসংঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্থা ডব্লিউএইচও বৈশ্বিক স্বাস্থ্যের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে। এছাড়া বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ চীন সফরে ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ ও দেশটিতে বিমান চলাচল স্থগিত করেছে।

কিন্তু মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, চীনের নেয়া নাটকীয় পদক্ষেপের ফলে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধের সুযোগ তৈরি হয়েছে। সংস্থাটির প্রধান টেড্রোস অ্যাডহ্যানম ঘেব্রেইয়েসুস বলেছেন, ভাইরাসে আক্রান্তদের ৯৯ শতাংশ চীনে। বাকি বিশ্বে মাত্র ১৭৬ জন। এর মানে এই নয় যে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে না। কিন্তু এটা নিয়ে কাজ করার জন্য আমাদের একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে।

Advertisement

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধানের এই বক্তব্য এমন এক সময় এল যখন সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া এবং থাইল্যান্ডে নতুন করে যারা সংক্রমিত হয়েছেন; তারা চীন সফর করেননি। বুধবার জাপান সরকার বলছে, প্রমোদতরীতে কোয়ারেন্টাইনে থাকা ৩ হাজার ৭১১ জনের মধ্যে অন্তত ১০ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

চীনের অন্যান্য ব্যাপক জনবহুল মেট্রোপলিটন শহরগুলোতে এই ভাইরাসের বিস্তারের ব্যাপারে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মাঝে দেশটির সাংহাই-শহ অন্তত তিনটি শহরে মানুষের চলাচলে ব্যাপক বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

চীনের প্রযুক্তি জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান আলিবাবার প্রধান কার্যালয় দেশটির হ্যাংঝু প্রদেশে অবস্থিত। এই শহরের কিছু অংশ অবরুদ্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রত্যেক পরিবার থেকে প্রতি দুই দিনে একজন করে ব্যক্তি বাড়ির বাইরে বের হয়ে প্রয়োজনীয় নিত্য-সামগ্রী কিনতে পারবেন। নতুন এই নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছেন শহরটির প্রায় ৩০ লাখ মানুষ।

সাংহাই থেকে প্রায় ১৭৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হ্যাংঝুতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২০০ জনের বেশি। তাদের মধ্যে একজন মারা গেছেন।

Advertisement

গত ডিসেম্বরে উহানের একটি সামুদ্রিক খাবারের বাজার থেকে প্রাণীর মাধ্যমে মানুষের দেহে ছড়িয়ে পড়িয়ে নতুন এই করোনাভাইরাস। নজিরবিহীন ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে চীন এই ভাইরাসের বিস্তার রোধের কঠিন লড়াই করলেও উৎসস্থল উহানের গণ্ডি পেরিয়ে এটি এখন বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এই প্রাদুর্ভাবটি এখনও বৈশ্বিক মহামারিতে রুপ নেয়নি। তবে বিশ্বের উন্নত দেশগুলো করোনাভাইরাস মোকাবেলায় চীনের সঙ্গে তথ্য-উপাত্ত আদান-প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সংস্থাটির প্রধান অ্যাডহ্যানম ঘেব্রেইয়েসুস।

তিনি বলেন, চীনের বাইরে এখন পর্যন্ত ১৭৬ জনের আক্রান্ত হওয়ার তথ্য মিলেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই আক্রান্তদের মাত্র ৩৮ শতাংশের পূর্ণাঙ্গ তথ্য পেয়েছে।

সূত্র : এএফপি।

এসআইএস/এমকেএইচ