ঢাকায় নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত পিটার ফারেনহোল্টজ বলেছেন, বাংলাদেশের মতো দ্রুত ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির এগিয়ে যেতে আগামী কয়েক বছরে ১২০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন। আর এর বড় অংশ আসতে পারে বৈদেশিক বিনিয়োগ থেকে। তবে এ বৈদেশিক বিনিয়োগ পেতে ব্যবসায়িক পরিবেশ পরিবর্তন হওয়া জরুরি।
Advertisement
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকার জার্মান দূতাবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। ‘জার্মান একাডেমিক এক্সচেঞ্জ সার্ভিস’ (ডিএএডি) নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএএডি’র আঞ্চলিক পরিচালক কাটাজা ল্যাসসহ দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশে জার্মান বিনিয়োগ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জার্মান রাষ্ট্রদূত বলেন, ৭০টিরও বেশি জার্মান প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছে। তবে বাংলাদেশের অর্থনীতির তুলনায় এখানে বৈদেশিক বিনিয়োগ বেশ কম। বাংলাদেশ বিশ্বের দ্রুত ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিগুলোর মধ্যে একটি।আগামী কয়েক বছরে বাংলাদেশের ১২০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে। স্থানীয় ব্যাংকগুলো বা পুঁজিবাজার এ অর্থ জোগাড় করতে পারবে বলে আমি মনে করি না। সরকার কিছু তহবিল দিতে পারে। তবে এ অর্থের বড় অংশই আসবে বৈদেশিক বিনিয়োগ থেকে।
তিনি আরও বলেন, তবে এ বিনিয়োগ পেতে ব্যবসায়িক পরিবেশের পরিবর্তন হওয়া জরুরি। তা না হলে বাংলাদেশে যথেষ্ট বৈদেশিক বিনিয়োগ আসবে না। বাংলাদেশে উন্নয়নের সামনের দিকে এগিয়ে নিতে এটি প্রয়োজনীয়। দুর্নীতি দূর করতে হবে। নিয়ন্ত্রক পরিবেশের পরিবর্তন আনতে হবে।
Advertisement
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া বা মালয়েশিয়ার তুলনায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থী পেতে জার্মান একটু দেরি করে ফেলল কি না? -এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএএডি’র আঞ্চলিক পরিচালক কাটাজা ল্যাস বলেন, আমরা একটু দেরি করে ফেলেছি এটা সত্যি। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক একটা সম্পর্ক রয়েছে। তাছাড়া আগে জার্মানে সকল বিষয়ে ইংরেজিতে পড়াশোনা হত না। তবে এটি এখন পরিবর্তন হয়েছে। এখন জার্মানিতে ১০০টির বেশি বিষয়ে ইংরেজিতে উচ্চতর ডিগ্রি নেয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে জার্মান রাষ্ট্রদূত পিটার ফারেনহোল্টজ বলেন, বর্তমানে জার্মান যাওয়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। আমরা এ সংখ্যা বৃদ্ধি করতে চাই।
তিনি জানান, বাংলাদেশে জার্মানির কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ক্যাম্পাস খোলার কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই। বিশ্বের কিছু দেশে জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস রয়েছে। কেনিয়াতে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন পরিকল্পনা পর্যায়ে রয়েছে। মিশরে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। বাংলাদেশে শাখা ক্যাম্পাস শুরু করা সম্ভব। তবে এখনই সেই সময় আসেনি।
জার্মান দূতাবাস জানায়, ১৯৫৩ সালে বাংলাদেশ থেকে প্রথম ডিএএডি প্রোগ্রামের আওতায় শিক্ষার্থীরা জার্মান গিয়েছিলেন। গত পাঁচ বছরে জার্মানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। ২০১৪ সালে ২ হাজার ২৭৭ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী জার্মান পড়তে যায়। ২০১৮ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ২২০ জনে।
Advertisement
তবে এ সময়ে জার্মানে বিদেশি শিক্ষার্থী প্রায় সাড়ে ১৩ শতাংশ করে বেড়েছে। ২০১৮-১৯ সালে জার্মানে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৬৬৫ জন। যেখানে জার্মানিতে বিদেশি শিক্ষার্থীর তুলনায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ১ শতাংশ।
জেপি/আরএস/জেআইএম