তামিম ইকবাল আজ তার পাশেই দাঁড়ালেন। এতকাল বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে একমাত্র ট্রিপল সেঞ্চুরির মালিক ছিলেন রকিবুল হাসান। ২০০৭ সালে জাতীয় লিগের ম্যাচে ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে বরিশালের হয়ে সিলেটের বিপক্ষে ৩১৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন ডানহাতি রকিবুল। ঠিক ১১ ঘন্টা উইকেটে কাটিয়ে ৬০৯ বলে ৩৩ বাউন্ডারিতে ঐ ট্রিপল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন রকিবুল।
Advertisement
২০০৭ থেকে ২০২০-এক যুগ পেরিয়ে ১৩ বছরের মাথায় সেই একক কৃতিত্ব হলো হাতছাড়া। তাতে ভাগ বসালেন তামিম। আর তামিম ইকবালের সে অর্জন মাঠে ফিল্ডর হিসেবে চেয়ে চেয়ে দেখলেন সেই রকিবুল হাসান। তার রেকর্ড ভেঙে যাচ্ছে, ভেঙে গেল-সবই দেখেছেন মাঠে দাঁড়িয়েই।
রকিবুলের ৩১৩ রানের রেকর্ড ভেঙে তামিম এখন বাংলাদেশের ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় ব্যক্তিগত ইনিংসের (৩৩৪) মালিক। প্রতিপক্ষ দলের ক্রিকেটার হিসেবে মাঠে দাঁড়িয়ে তা দেখতে কেমন লাগলো রকিবুলের? ভেতরে ‘শেল’ হয়ে বিঁধলো? মনের গহীনে অব্যক্ত যন্ত্রণা এসে বাসা বাঁধলো? মাঠে ফিল্ডিংয়ের সময় কি তামিমের মনোযোগ, মনোসংযোগ আর ধৈর্য্যচ্যুতি ধরাতে ‘স্লেজিং’ করেছিলেন রকিবুল?
যারা এমন ভাবছেন, তারা বরং অবাকই হবেন। কারণ রকিবুল নয়, তামিমই নাকি উল্টো স্লেজিং করেছিলেন রকিবুলকে! তামিম যত ৩০০‘র কাছাকাছি যাচ্ছিলেন, ততই রকিবুলকে পপিং ক্রিজে দাঁড়িয়েই মনে করিয়ে দিচ্ছিলেন, আমি কিন্তু তোমার কাছাকাছি যাচ্ছি। তোমার একক কৃতিত্বে ভাগ বসাচ্ছি। দিন শেষে তামিমের কাছে সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল, ‘যার রেকর্ড ভাঙলেন, সেই রকিবুল কি আপনাকে স্লেজিং করেছিলেন ?’ তামিম জবাব দেওয়ার আগে উল্টো রকিবুল বলে উঠলেন, ‘না, না। আমি ফিল্ডিংয়ে থেকে তামিমকে যত না স্লেজিং করেছি, তামিম ব্যাটিংয়ে থেকে বরং আমাকে বেশি স্লেজিং করেছে।’
Advertisement
মাঠে একজন আরেকজনের সাথে খুনসুঁটি করতেই পারেন। কারণ তামিম আর রকিবুল দুজনই ভালো বন্ধু। দীর্ঘদিনের সঙ্গী। এমন সৃষ্টি সুখের আনন্দটা তাই বন্ধু রকিবুলকে সাথে নিয়েই পালন করলেন তামিম। ভাবছেন রকিবুল আর তামিম আবার বন্ধু কিভাবে?
সেই জাতীয় অনূর্ধ্ব- ১৭ থেকে একসঙ্গে খেলছেন। আর যুব দল অনূর্ধ্ব-১৯ ‘এও একসাথে খেলেছেন। তাই একজন আরেকজনকে ‘দোস্ত ’ বরেই সম্মোধন করেন। তাদের মধ্যে এমন খুনসুঁটি তো হবেই!
এআরবি/এমএমআর/এমকেএইচ
Advertisement