হুবেই প্রদেশের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস নিয়ে নতুন এক আতঙ্ক তৈরি হয়েছে চীনাদের মধ্যে। ভাইরাসটি প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হচ্ছে, এমন গুজব ছড়ানোর পর চীনারা তাদের পোষা প্রাণীগুলোকে বহুতল ভবন থেকে ছুড়ে মারছেন। যত্রতত্র এসব পোষা প্রাণী মরে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
Advertisement
ব্রিটিশ দৈনিক সান এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হচ্ছে, গোটা চীন এখন এক মহাসংকটে। শুধু হুবেই নয় চীন ছাড়াও বিশ্বের বিশটির বেশি দেশে এখন এই ভাইরাস ছড়িয়েছে। কিন্তু চীন থেকে এমন কিছু ছবি পাওয়া গেছে যা মর্মান্তিক। কুকুর-বিড়ালের রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে দেশটির বিভিন্ন শহরের রাস্তায় রাস্তায়।
রোববার প্রকাশিত সচিত্র ওই প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের হুবেই প্রদেশের তিয়ানজিন নামক শহরে একটি আবাসিক এলাকার রাস্তায় মরে পড়ে আছে একটি পোষা কুকুর। বহুতল ভবন থেকে পোষা ওই প্রাণীটিকে কেউ ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। যার গোটা শরীর রক্তাক্ত।
চীনের আরেক বড় শহর সাংহাই। ওই শহরেও এমন ঘটনা ঘটেছে একাধিক। শহরের এক রাস্তায় একসঙ্গে পাঁচটি পোষা বিড়াল রক্তাক্ত অবস্থায় মরে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। করোনাভাইরাস আতঙ্কে মানুষ তার প্রিয় পোষা প্রাণীগুলোকে ঘর থেকে বের করতে এভাবেই ছুড়ে ফেলে দিচ্ছে রাস্তায়।
Advertisement
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, ভোর চারটার দিকে বহুতল ভবনের একেবারে উপরের তলা থেকে ওই পোষা কুকুরগুলো ছুড়ে ফেলে দেয়া হয়। মাটিতে পড়ার আগে একটা গাড়ির উপরে পড়ে কুকুরগুলো। সেই শব্দ শুনে ঘুমন্ত অনেকে জেগে ওঠেন। অনেকে মনে করেছিলেন, সেখানে রাখা কোনো গাড়ির টায়ার হয়তো ফেটে গেছে।
রাস্তায় পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই কুকুরগুলো মারা যায়। চারপাশের ইটে তাদের রক্ত ছড়িয়ে পড়ে। মর্মান্তিক এসব ঘটনা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়, যখন দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে ডা. লি লানজুয়ান নামের এক চিকিৎসক দাবি করেন, ‘যদি পোষা প্রাণীগুলো ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েই থাকে তাহলে তাদেরও একাকী নির্জন স্থানে রাখা উচিত।’
পোষা প্রাণীর মাধ্যমে মানুষও করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হচ্ছে এমন গুজব সম্বন্ধে সচেতন করতে চায়না গ্লোবাল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেয়া (হু) একটি নোট প্রচার করছে। তাতে লেখা আছে, ‘কুকুর ও বিড়ালের মতো অন্যান্য পোষাপ্রাণী নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে, এমন কোনো প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।’
যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াভিত্তিক প্রাণী অধিকার সংরক্ষণবিষয়ক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান পেটার এশিয়াবিষয়ক গণমাধ্যম কর্মকর্তা কেইথ গুয়ো বলেন, ‘এটা খুবই মর্মান্তিক ব্যাপার। আমরা আশা করছি, যেসব অভিভাবক ঠান্ডা মাথায় অসহায় এসব পোষা প্রাণীকে খুন করছেন তাদের খুঁজে বের করবে পুলিশ। এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।’
Advertisement
এসএ/এমএস