তার টেস্ট সেঞ্চুরি ৯টি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে শতরান ১৫টি। কিন্তু আগে ২০৬ রানের বেশি করা হয়নি কখনও। আজ (রোববার) নিজেকে ছাপিয়ে প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুুরি করার আগে তামিম কি ভেবেছিলেন, এ ম্যাচেই সে অধরা কীর্তি গড়ে ফেলবেন?
Advertisement
আর আগের দিন শনিবার ডাবল সেঞ্চুরি পূর্ণ করে ২২২ রানে অপরাজিত থেকে সাজঘরে ফেরার পর কিংবা রাতে বিছানায় শুয়েও কি কখনও ভেবেছিলেন পরদিনই ক্যারিয়ারের প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুুুরি হয়ে যাবে?
শুনলে অবাক হবেন, কাল দ্বিতীয় দিন ডাবল সেঞ্চুুরির পর তো বহুদূরে; আজ সকালে তিনশো থেকে ৭৮ রান দূরে দাঁড়িয়ে ব্যাট হাতে মাঠে নামার সময়ও একবারের জন্য তামিমের মাথায় আসেনি ট্রিপল সেঞ্চুুরির কথা। এমনকি আড়াইশো পার হওয়ার পরও ভাবেননি-৩০০ করে ফেলতে পারি।
তাহলে কখন মনে হয়েছে আজই সেই দিন, আজই হয়তো ক্যারিয়ারের প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরিটি হয়ে যাবে? নিশ্চয়ই খুব জানতে ইচ্ছে করছে, তাই না? তাহলে শুনুন, ২৬০-২৭০ ‘র ঘরে গিয়েও তামিম ভাবেননি আজই ট্রিপল সেঞ্চুরি হয়ে যাবে। মনে হয়েছে অনেক পরে, ২৮০ ‘র ঘরে গিয়ে। তামিম নিজেই জানালেন সে কথা।
Advertisement
দিন শেষে তামিম বলেন, ‘সত্যি বলতে ২৬০-২৭০ হওয়ার পরও কিন্তু আমি এটা (ট্রিপল সেঞ্চুুরি) নিয়ে ভাবছিলাম না। ২৮০ টাচ করার পর আমি এটা নিয়ে চিন্তা করা শুরু করি।’
কেন আরও আগে ঐ চিন্তা মাথায় আসেনি? তারও উত্তর আছে। কারণ তামিমের মনে হয়েছে যে, ট্রিপল সেঞ্চুরির কথা ভেবে ব্যাট করলে যে পরিকল্পনায় এগোচ্ছিলেন, তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
তাই তো মুখে অমন কথা, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে যে, আমি যদি ওটা চিন্তা করি তাহলে যে প্ল্যান নিয়ে খেলছিলাম, সেটায় বাধা পড়বে। হয়তো আমি একটু অন্যভাবে খেলার চেষ্টা করব। আমি সেটা করিনি। স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করেছি। এটা আমার হয়ে কাজ করেছে। এটা ভালো ছিল।’
তামিম মনে করেন, গত দুই দিনের তুলনায় আজ উইকেট একটু হলেও কঠিন ছিল। তার ভাষায়, ‘দ্বিতীয় দিনের উইকেটের তুলনায় আজ উইকেট একটু কঠিন ছিল। ১৯-২০ হচ্ছিল। ওরকম বাউন্ডারিও পাচ্ছিলাম না। এজন্য সিঙ্গেল ও ডাবলস খুঁজছিলাম। টেস্ট ক্রিকেটে আপনি সেই সুবিধাটা পান। কারণ উইকেটের পেছনে অনেক ফিল্ডার থাকে। যখন ফিল্ডার বিট করেন, সিঙ্গেল ডাবলসের সুযোগ বেশি থাকে। এটাই চেষ্টা করছিলাম। সব সময় রানের খোঁজে ছিলাম। এজন্য পেরেছি।’
Advertisement
আর মাত্র ১৬ রান হলেই সাড়ে তিনশো রানের একটা মাইলফলক ছোঁয়া যেত। কিন্তু তার আগেই অধিনায়ক মুুমিনুল হক ইনিংস ডিক্লেয়ার করে দিয়েছেন। যে ওভারে ঐ ইনিংস ঘোষণা হলো, সেই ওভারে আরও একটি বল বাকি ছিল। তার আগে ৩০০ থেকে ৩৩৪ করার পথে তিন তিনটি ছক্কা হাঁকানো তামিম চেয়েছিলেন, সেই বলে আবার তুলে মারতে এবং ছক্কা হাঁকাতে। দিন শেষে কথায় পরিষ্কার, তামিম কায়মনে চাচ্ছিলেন ৩৫০ ‘র মাইলফলক ছুঁতে।
আর তাইতো এমন প্রতিক্রিয়া, ‘ওভারের আরেকটি বল বাকি ছিল। আমি ছক্কা মারার চিন্তা করছিলাম। ভাবছিলাম আরেকটা ছক্কা মেরে দিলে ৩৫০ থেকে ১০ রান দূরে (৩৪০) থাকতাম।’
তারপরও আফসোস নেই তামিমের। কারণ তার মনে হয়, দিন শেষে ৩০০ বা ৪০০ যাই হোক, ম্যাচ জয় ও সাফল্যই বড় ও শেষ কথা। এ কারণেই মুখে এমন কথা, ‘যদি দল ভালো ফল না করে তাহলে ওই অনুভূতিটা থাকে না। আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওদের তিন উইকেটও পড়ে গেছে। আরও ৭ উইকেট নিতে আমাদেরকে আরও বেশি পরিশ্রম করতে হবে।’
এআরবি/এমএমআর/এমকেএইচ