সবার জানা, এতকাল বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে একমাত্র ট্রিপল সেঞ্চুরিটি ছিল রকিবুল হাসানের। ২০০৭ সালে ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে জাতীয় লিগের ম্যাচে সিলেটের বিপক্ষে বরিশালের হয়ে রকিবুল হাসান করেছিলেন ৩১৩।
Advertisement
খুব স্বাভাবিকভাবেই আজ (রোববার) দুপুর পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ইনিংসটি ছিল রকিবুলের। মিরপুর শেরে বাংলায় তামিম আজ সে রেকর্ডটি ভেঙে দিলেন। তার ব্যাট থেকে বেরিয়ে এসেছে অপরাজিত ৩৩৪ রানের ইনিংস।
মজার বিষয় হলো, তামিম যার রেকর্ড ভেঙে এখন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইনিংসের মালিক, সেই রকিবুলও কিন্তু এ ম্যাচে আছেন। তামিম খেলছেন ইসলামি ব্যাংক পূর্বাঞ্চলের হয়ে, আর প্রতিপক্ষ ওয়ালটন মধ্যাঞ্চলের একাদশে আছেন রকিবুল হাসান। এটা কি কাকতালীয়? আজ লাঞ্চের মিনিট চল্লিশ পর তামিম যখন ঠিক তিনশোর দোরগোড়ায়, মানে ২৯৯ ‘তে, তখন কভারেই দাঁড়ানো ছিলেন রকিবুল। খেলা শেষে ট্রিপল সেঞ্চুুরির অসামান্য কৃতিত্বের জন্য কেক কাটার উৎসবেও রকিবুলকে সাথে রাখলেন তামিম। শুধু কেক কাটার আনন্দ একসাথে উপভোগ করাই নয়, দিন শেষে তামিম সোজাসুজি জানিয়ে দিলেন, এতকাল রকিবুলের সেই ৩১৩ রানের ইনিংসটিই ছিল তাদের অন্যরকম অনুপ্রেরণা। এতদিন ৩০০ করার কথা মনে হলেই তামিমের চিন্তায় ভেসে উঠতো রকিবুলের সেই ইনিংস। ঐ ইনিংস সাজাতে কতইনা ধৈর্য্য দেখিয়েছেন রকিবুল।
তাই আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাস করার মুহূর্তেও রকিবুলের প্রশংসা তামিমের মুখে, ‘সত্যি কথা এভাবে ভাবিনি। তবে আমি যখনই চিন্তা করি যে রকিবুল একমাত্র যে তিনশ করেছে, তখন ভাবতাম যে কত ধৈর্য্য ধরে তিনশ করেছে।’ তামিম যোগ করেন, ‘৩০০ করাটা তো এত সহজ না।’
Advertisement
বরং তামিমের মনে হয়- রকিবুল যে উইকেটে ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছেন, সেই উইকেট ছিল আরও স্লো ও স্পিনিং। তাই মুখে এমন কথা, ‘আগের উইকেট তো আরও স্লো থাকতো। স্পিনিংও। এই জায়গায় তিনশ করা কঠিন। একটু যদি ফাস্ট থাকে, আউটফিল্ড যদি ভালো হয়, তাহলে একটু সহজ হয়। আমাদের উইকেটে চিন্তা করলে কঠিন।’
তাই তামিমের চিন্তা ছিল, অমন কঠিন উইকেটে ঐ ট্রিপল সেঞ্চুরি কিভাবে করেছেন রকিবুল? আজ পড়ন্ত বিকেলে শেরে বাংলায় রকিবুলকে কৃতিত্ব দেয়ার কথা অকপটে স্বীকার করে তামিম তাই বলে ওঠেন, ‘এটা সবসময় চিন্তা করতাম উনি (রকিবুল) এমন ইনিংস খেলেছিলেন কিভাবে?’ তামিম আরও যোগ করেন, রকিবুলের ঐ ট্রিপল সেঞ্চুুরি দীর্ঘদিন বাংলাদেশের জাতীয় দলের ড্রেসিং রুমেও আলোচনার বিষয় ছিল। বাঁহাতি এই ওপেনার বলেন, ‘আমাদের জাতীয় দলের ড্রেসিং রুমে ঐ ট্রিপল সেঞ্চুুরি নিয়ে আলোচনা হতো। এবং আমরা ভাবতাম একজন কিভাবে এত বল খেলল। ও তো মনে হয় ৬০০ র মতো বল খেলেছে। ওটাই আর কি! এটা নিয়ে কোনো পরিকল্পনা ছিল না।’
এআরবি/এমএমআর/এমএস
Advertisement