আন্তর্জাতিক

মাস্ক সংকট, ফলের খোসা-বোতল দিয়ে মুখ ঢাকছে চীনারা

চীনে রীতিমতো ভয়াবহ আকার ধারণ করছে করোনাভাইরাস। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা তিনশ ছাড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত ৩০৪ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। ২৭টি দেশে এই ভাইরাসে ১৪ হাজার ৫শ ৫১ জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

Advertisement

অনেক দেশই এই ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে চীন থেকে আগতদের ওপর অন অ্যারাইভাল ভিসা বন্ধ করে দিচ্ছে। নিউ ইয়র্কে এক ব্যক্তি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কীনা তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।

গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ২৭টির মতো দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস।

চীনে যেভাবে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে তাতে আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ। আতঙ্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, দেশটির বেশ কিছু স্থানে মাস্কের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। সাধারণ মানুষ মাস্ক না পেয়ে রীতিমতো বুদ্ধি খাটিয়ে এমন কিছু জিনিস মুখে পড়তে শুরু করেছেন যা দেখে হতবাক হচ্ছে বিভিন্ন দেশ।

Advertisement

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বেশ কয়েকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, যেসব মানুষ মাস্ক কিনতে পারছেন না তারা নানারকম ফলের খোসা, বোতল ও নানান জিনিস দিয়ে মাস্কের মতো করে বানিয়ে ফেলেছেন। করোনাভাইরাস যখন ছড়িয়ে পড়ে তখন প্রথমদিকে সেভাবে মাস্কের আকাল পড়েনি।

অনেকে একই মাস্ক পুনরায় ব্যবহার করেন। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে মাস্ক মাত্র একবারই ব্যবহার করা উচিত। আর এরপরেই সাধারণ মানুষের মধ্যে এ নিয়ে হুড়োহুড়ি পড়ে গেছে। করোনা থেকে বাঁচতে পানির বোতল, ফলের খোসা এমনকি বাঁধাকপির খোসাও ব্যবহার শুরু হয়েছে।

করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ কী?

এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শুরুতে জ্বর ও শুষ্ক কাশি হতে পারে। এর সপ্তাহখানেক পর শ্বাসকষ্টও দেখা দেয়। অনেক সময় নিউমোনিয়াও হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা লাগে। তবে এসব লক্ষণ মূলত রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরই জানা গেছে।

Advertisement

সেক্ষেত্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার একদম প্রাথমিক লক্ষণ কী বা আদৌ তা বোঝা যায় কি-না তা এখনও অজানা। তবে নতুন এই করোনাভাইরাস যথেষ্ট বিপজ্জনক। সাধারণ ঠান্ডা-জ্বরের লক্ষণ থেকে এটি মৃত্যুর দুয়ার পর্যন্তও নিয়ে যেতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভাইরাসের নাম দিয়েছে ২০১৯ নভেল করোনাভাইরাস। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিরা সবাই চীনের নাগরিক। অপরদিকে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ২৯৪ জনই হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা। শুধুমাত্র শনিবারই হুবেই প্রদেশে আরও ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

অপরদিকে, চীনে নতুন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে আরও দুই হাজার ৫৯০ জন। শুধুমাত্র চীনেই এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ হাজার ৩৮০। অপরদিকে চীনের বাইরে প্রায় ১শ জনের এই ভাইরাসে আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে।

টিটিএন/জেআইএম