এবার চীন ফেরত বিদেশি নাগরিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে নিউজিল্যান্ড। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে, সাম্প্রতিককালে চীনে অবস্থানরত কোনো বিদেশি ভ্রমণকারীকে তারা নিজ দেশে প্রবেশ করতে দেবে না। অপরদিকে, রাশিয়া, জাপান, পাকিস্তান এবং ইতালিসহ কয়েকটি দেশও একই ধরণের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে।
Advertisement
রোববার এক ঘোষণায় নিউজিল্যান্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় চীনের মূল ভূখণ্ডে সাম্প্রতিক সময়ে সফর করেছেন এমন বিদেশি নাগরিকদের দেশটিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
সোমবার থেকেই এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। একই সঙ্গে পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নিউজিল্যান্ডের নাগরিকদের চীনে ভ্রমণের ওপর সতর্কতা জারি করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে নাগরিকদের চীনে সফর না করার জন্য বলা হয়েছে।
নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডার্ন এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমরা এখনও এ বিষয়টি নিশ্চিত নই যে ঠিক কিভাবে করোনাভাইরাস একজন থেকে আরেকজনে সংক্রমিত হচ্ছে। সেকারণে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা আমাদের পরামর্শ দিয়েছেন যে, আমাদের অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বণ করা উচিত।
Advertisement
তবে নিউজিল্যান্ডের নাগরিক এবং সেখানকার স্থায়ী বাসিন্দারা দেশটিতে প্রবেশ করতে পারবেন বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। যদিও তাদের ১৪ দিন আইসোলেশনে থাকতে হবে। নিউজিল্যান্ডে এখনও পর্যন্ত কারো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এ জাতীয় পদক্ষেপ না নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা ভালোর চাইতে ক্ষতি বেশি করবে। কেননা এতে তথ্য আদান-প্রদান, চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ এবং অর্থনীতির ক্ষতি হবে।
সীমান্ত পারাপারের আনুষ্ঠানিক স্থানগুলোতে স্ক্রিনিং ব্যবস্থা চালুর পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। তারা সতর্ক করে বলেছেন, সীমান্ত বন্ধ করে দিলে যাত্রীরা অনানুষ্ঠানিকভাবে বা অবৈধভাবে দেশে প্রবেশের মাধ্যমে ভাইরাসের বিস্তারকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
একের পর এক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেছে চীন। যেসব দেশ তাদের ওপর এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা এনেছে সেসব দেশের সরকার, স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ উপেক্ষা করছে বলেও অভিযোগ করেছেন তারা।
Advertisement
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিং বলেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে সুপারিশ করলেও যুক্তরাষ্ট্র ঠিক তার উল্টোদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে। যা কোন সদিচ্ছার পরিচয় নয়।
এদিকে, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা তিনশ ছাড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত ৩০৪ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। ২৭টি দেশে এই ভাইরাসে ১৪ হাজার ৫শ ৫১ জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
অনেক দেশই এই ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে চীন থেকে আগতদের ওপর অন অ্যারাইভাল ভিসা বন্ধ করে দিচ্ছে। নিউ ইয়র্কে এক ব্যক্তি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কীনা তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ২৭টির মতো দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস।
টিটিএন/জেআইএম