দেশজুড়ে

মহাসড়কের লেন দখল করে হাইওয়ে পুলিশের ডাম্পিং স্টেশন

ঢাকা-ময়মনসিংহ চারলেন মহাসড়কের ব্যস্ততম এলাকা মাওনা চৌরাস্তা। এলাকাটিতে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে দীর্ঘ সময় যানজট লেগে থাকতো। জনবহুল এই এলাকার গুরুত্ব বিবেচনা করে এখানে একটি উড়াল সড়ক নির্মাণ করে সরকার। চারলেন ও উড়াল সড়ক থাকার পরও এই এলাকার জনদুর্ভোগ কমেনি। কারণ উড়াল সড়কের পাশেই মহাসড়কের এক লেন দখল করে হাইওয়ে পুলিশ গড়ে তুলেছে ডাম্পিং স্টেশন।

Advertisement

ডাম্পিং স্টেশনটি মহাসড়কের লেন ছাপিয়ে ফুটপাতও দখল করে নিয়েছে। যখন যানবাহনের চাপ বেড়ে যায় তখন কার্যত দুই লেনেই বন্ধ থাকে। এসব ডাম্পিং স্টেশনের কারণে চারলেনের সুফল পাওয়ার পরিবর্তে জনদুর্ভোগ দেখা দেয়।

হাইওয়ে পুলিশের দেয়া তথ্য মতে, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভবানীপুর থেকে জৈনাবাজার ২২ কিলোমিটার মহাসড়কের নিরাপত্তায় নিয়োজিত মাওনা হাইওয়ে থানা। প্রতিদিনই মহাসড়কের বিভিন্ন স্থান থেকে নানা অভিযোগ ও দুর্ঘটনা কবলিত যানবাহন জব্দ করে পুলিশ। যানবাহনগুলো মাওনা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে মহাসড়কের এক লেন দখল করে রাখা হয়। এসব যানবাহনের মধ্যে কিছু যানবাহন মহাসড়কের ওপরেই পড়ে থাকে বছরের পর বছর। দীর্ঘ সময় পড়ে থেকে এসব যানবাহন যেমন সড়কে চলাচলের সক্ষমতা হারাচ্ছে তেমনি যান চলাচলের প্রতিবন্ধকতাসহ নানা ধরনের সমস্যা তৈরি করছে।

তাকওয়া পরিবহনের চালক আমিনুল ইসলাম বলেন, স্বল্প দূরত্বে চলাচলকারী পরিবহনগুলোকে উড়াল সেতুর নিচ দিয়েই চলাচল করতে হয়। দূরপাল্লার যানবাহনগুলো উড়াল সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করে। উড়াল সেতু ঘেঁষে থাকা মাওনা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে দীর্ঘ জায়গা জুড়ে মহাসড়কের এক লেন দখল করে নানা অভিযোগে আটক বাস-ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন রাখা হয়েছে। এতে প্রায়ই যানজটের তৈরি হচ্ছে। ময়মনসিংহগামী দুই লেন থেকে এক লেন দখল করে জব্দকৃত যানবাহন রাখায় প্রায় সময় ছোট-খাটো দুর্ঘটনাও ঘটছে।

Advertisement

ট্রাক চালক লিয়াকত আলী বলেন, পুলিশের দেখাদেখি অনেক সাধারণ পরিবহনের চালকরাও মহাসড়কের মধ্যেই গাড়ি পার্কিং করে রাখেন। এতে প্রতিনিয়তই যানজটের ভোগান্তি পোহাতে হয়।

মাওনা হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, মহাসড়ক থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে হাইওয়ে থানার অবস্থান হওয়ায় কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয় মাওনা চৌরাস্তায় মহাসড়কের পাশের ফাঁড়ি থেকে। সেখানে জায়গা সংকট একটি বিরাট সমস্যা হিসেবে দাঁড়িয়েছে। জব্দকৃত যানবাহন রাখার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে মহাসড়কের পাশেই রাখতে হচ্ছে। এতে জনদুর্ভোগ তৈরি হলেও আমাদের কোনো উপায় নেই।

হাইওয়ে পুলিশের গাজীপুর জোনের পুলিশ সুপার আলী আহমেদ খান জানান, হাইওয়ে পুলিশের জব্দকৃত যানবাহন রাখার মত কোনো জায়গা আমরা বরাদ্দ পাইনি। জায়গার অভাবেই মূলত মহাসড়কের পাশে গাড়িগুলো রাখতে হচ্ছে। এই সমস্যা লাঘবে মহাসড়কের প্রতিটি থানার জন্য পাঁচ একর করে জমি ডাম্পিং স্টেশনের জন্য বরাদ্দ দিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে অচিরেই জায়গা বরাদ্দ পাওয়া যাবে, সমস্যারও সমাধান হবে।

শিহাব খান/আরএআর/এমএস

Advertisement