খেলাধুলা

সুপার ওভার, নিউজিল্যান্ড, পরাজয় যেন তিনটি সমার্থক শব্দ

সুপার ওভার ভাগ্য এতটাই খারাপ নিউজিল্যান্ডের। সুপার ওভারে ম্যচা গড়ালেই হারতে হয় তাদেরকে। এটা যেন একটা নিয়তি হয়েই দাঁড়িয়েছে কিউইদের ভাগ্যে। এবার টানা দুটি ম্যাচ সুপার ওভারে গড়ালো এবং দুটি ম্যাচেই হেরে গেলো নিউজিল্যান্ড। তাও নিজেদের মাঠে।

Advertisement

এ নিয়ে গত সাত মাসে মোট চারটি ম্যাচ সুপার ওভারে গড়ালো নিউজিল্যান্ডের। চারটিতেই হেরেছে তারা। সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি হলো বিশ্বকাপের ফাইনাল। ওই ম্যাচে সুপার ওভারও টাই হয়েছিল কিউইদের। কিন্তু জয়-পরাজয় নির্ধারণে অদ্ভূত এক নিয়ম, বাউন্ডারি গণনার ভিত্তিতে জয়ী (বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন) ঘোষণা করা হয়েছিল ইংল্যান্ডকে।

এরপর, গত নভেম্বরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আরও একটি ম্যাচ গড়িয়েছিল সুপার ওভারে। সেটাতেও হেরে বসেছিল কিউইরা। এবার ভারতের বিপক্ষে টানা দুটি ম্যাচ। এবারও দুই ম্যাচেই হার।

সব মিলিয়ে মোট ৮টি ম্যাচকে সুপার ওভারে নিয়ে গিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। এর মধ্যে ৭টিতেই হেরেছে তারা। জিততে পেরেছিল মাত্র একটি ম্যাচে।

Advertisement

হ্যামিল্টনে সুপার ওভারে হারের পর অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন বলেছিলেন, ‘সুপার ওভার আর আমাদের বন্ধু হতে পারলো না।’ তার আক্ষেপটা রয়েই গেলো। আবারও হারের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হলো, সুপার ওভার ভাগ্য তাদের জন্য নয়।

এক নজরে দেখে নেয়া যাক নিউজিল্যান্ডের সুপার ওভারের ম্যাচগুলো।

ডিসেম্বর ২০০৮ : ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হার

অকল্যান্ডে সেবার সুপার ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হার মানে নিউজিল্যান্ড। ২০ ওভারে নিউজিল্যান্ড তোলে ৭ উইকেটে ১৫৫ রান। নির্ধারিত ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ করে আট উইকেটে ১৫৫। সুপার ওভারে ক্যারিবিয়ানরা করে এক উইকেটে ২৫। নিউজিল্যান্ড ২ উইকেটে ১৫ রান করায় ম্যাচ হেরে যায়।

Advertisement

ফেব্রুয়ারি ২০০৮ : অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয়

শুধুমাত্র সুপার ওভারে এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারায় নিউজিল্যান্ড। ২০ ওভারে নিউজিল্যান্ড করেছিল ছয় উইকেটে ২১৪ রান। অস্ট্রেলিয়া করে চার উইকেটে ২১৪। সুপার ওভারে কিউয়িরা তোলে বিনা উইকেটে ৯ রান। অস্ট্রেলিয়া ১ উইকেটে ৬ রান করায় ম্যাচ হেরে যায়।

সেপ্টেম্বর ২০১২ : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হার

২০১২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার ওভারে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে যায় নিউজিল্যান্ড। ২০ ওভারে কিউয়িরা করে ৭ উইকেটে ১৭৪ রান। শ্রীলঙ্কা করে ৬ উইকেটে করে ১৭৪। সুপার ওভারে শ্রীলঙ্কা এক উইকেটে ১৩ রান তোলে। নিউজিল্যান্ড এক উইকেটে ৭ রান করে ম্যাচ হারে।

অক্টোবর ২০১২ : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হার

একই বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয়বার সুপার ওভারে গড়ায় নিউজিল্যান্ডের ম্যাচ। এবারও তারা হার মানতে বাধ্য হয়। হারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে। ১৯.৩ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৩৯ রানে অল আউট হয়ে যায়। নিউজিল্যান্ড ২০ ওভারে করে সাত উইকেটে ১৩৯ রান। সুপার ওভারে ক্যারিবিয়ানরা করে বিনা উইকেটে ১৯ রান। কিউয়িরা বিনা উইকেটে ১৭ রান করে ম্যাচ হারে।

জুলাই ২০১৯ : বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে হার

ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের ফাইনালে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৪১ রান করেছিল নিউজিল্যান্ড। জবাবে ইংল্যান্ডও থেমে যায় ২৪১ রানে। বেন স্টোকসের অপরাজিত ৮৪ বীরোচিত ইনিংসের ওপর ভর করে ম্যাচ বাঁচিয়ে রাখে ইংলিশরা। এরপর ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। সেখানে ইংল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করে সংগ্রহ করে ১৫ রান। জবাবে নিউজিল্যান্ডও করে ১৫ রান। বাউন্ডারি গণনার হিসেবে জিতে যায় ইংল্যান্ড।

নভেম্বর ২০১৯ : ইংল্যান্ডের কাছে হার

ঘরের মাঠ অকল্যান্ডে আবারও সুপার ওভার। এবারও প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড এবং এবারও সুপার ওভারে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে যায় নিউজিল্যান্ড। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ১১ ওভারে কিউয়িরা করেছিল পাঁচ উইকেটে ১৪৬ রান। ইংল্যান্ড করে সাত উইকেটে ১৪৬। সুপার ওভারে ইংল্যান্ড তোলে বিনা উইকেটে ১৭ রান। নিউজিল্যান্ড এক উইকেটে আট রান করে ম্যাচ হারে।

জানুয়ারি ২০২০ : ভারতের কাছে হার

আরও একটি সুপার ওভার ট্র্যাজেডি। হ্যামিল্টনে ভারতের কাছে সুপার ওভারে হার মানে নিউজিল্যান্ড। ভারত ২০ ওভারে তুলেছিল পাঁচ উইকেটে ১৭৯ রান। কিউইরা ৬ উইকেটে ১৭৯ রান করায় ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। নিউজিল্যান্ড বিনা উইকেটে ১৭ রান করে। ভারত বিনা উইকেটে ২০ রান করে ম্যাচ জিতে নেয়।

জানুয়ারি ২০২০ : ভারতের কাছে হার

সুপার ওভার দুর্ভাগ্য তাড়া করছেই নিউজিল্যান্ড। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে সুপার ওভারে গিয়ে হার মানে নিউজিল্যান্ড। ভারত ২০ ওভারে তুলেছিল ১৬৫ রান। নিউজিল্যান্ডও করে ১৬৫ রান। ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। প্রথমে ব্যাট করে কিউইরা করে ১৩ রান। জবাবে লোকেশ রাহুলের ছক্কা, চার আর বিরাক কোহলির ডাবল ও বাউন্ডারিতে জিতে যায় ভারত।

আইএইচএস/পিআর