আন্তর্জাতিক

চীন ভ্রমণে যুক্তরাষ্ট্রের রেড অ্যালার্ট জারি

চীন ভ্রমণে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। নিজ দেশের নাগরিকদের চীন সফরের ওপর সর্বোচ্চ ৪ মাত্রার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। চীনে করোনাভাইরাস ভয়াবহ আকার ধারণ করায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

হুবেই প্রদেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার আরও ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার ফলে ভাইরাসটির কেন্দ্রস্থল উহান শহরে মৃতের সংখ্যা ২০৪ জনে দাঁড়িয়েছে। গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ২০টির মতো দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস।

কর্মকর্তারা বলছেন, গত সপ্তাহের চেয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দশগুণ বেড়ে গেছে। সে কারণে আমেরিকানদের চীন সফর এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে।

অপরদিকে, চীন বলছে তারা বিদেশি নাগরিকদের উহানের বাসিন্দাদের কাছ থেকে আলাদা রাখবে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর এই মুহূর্তে চীন সফরে না যাওয়ার জন্য নিজে দেশের নাগরিকদের সতর্ক করেছে।

Advertisement

এদিকে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক বলেছে তারা করোনাভাইরাস-সংক্রান্ত ভুল তথ্য ছড়ানো বন্ধে পদক্ষেপ নেবে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। চীনের নতুন করোনাভাইরাসের কারণে নাগরিক স্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়তে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে চীনে সফর না করার জন্য নাগরিকদের সতর্ক করা হয়েছে।

এদিকে চীনে করোনাভাইরাস মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া মোকাবিলায় বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বৃহস্পতিবার জেনেভায় এক জরুরি বৈঠক শেষে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে একই সঙ্গে সংস্থাটি জোর দিয়েছে বলেছে যে, তারা চীনের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার বিপক্ষে।

করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ কী?

এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শুরুতে জ্বর ও শুষ্ক কাশি হতে পারে। এর সপ্তাহখানেক পর শ্বাসকষ্টও দেখা দেয়। অনেক সময় নিউমোনিয়াও হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা লাগে। তবে এসব লক্ষণ মূলত রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরই জানা গেছে।

Advertisement

সেক্ষেত্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার একদম প্রাথমিক লক্ষণ কী বা আদৌ তা বোঝা যায় কি-না তা এখনও অজানা। তবে নতুন এই করোনাভাইরাস যথেষ্ট বিপজ্জনক। সাধারণ ঠান্ডা-জ্বরের লক্ষণ থেকে এটি মৃত্যুর দুয়ার পর্যন্তও নিয়ে যেতে পারে।

এদিকে, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে চীনের মূল ভূখণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১৩ জনে। এছাড়া এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

হুবেই প্রদেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার আরও ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার ফলে ভাইরাসটির কেন্দ্রস্থল উহান শহরে মৃতের সংখ্যা ২০৪ জনে দাঁড়িয়েছে। গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ২০টির মতো দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস।

এ পর্যন্ত চীন, থাইল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ভিয়েতনাম, হংকং, সিঙ্গাপুর, ভারত, মালয়েশিয়া, নেপাল, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানি, কম্বোডিয়া, শ্রীলঙ্কা, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং তাইওয়ানে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া ইসরায়েলেও এক রোগীর শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে নতুন একটি হাসপাতালের কাজ প্রায় শেষে দিকে। করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় আগেই হাসপাতাল নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিল চীন। সে অনুযায়ী আগেই একটি হাসপাতাল তৈরির কাজ শেষ হয়েছে এবং সেখানকার কার্যক্রমও শুরু হয়ে গেছে। সেখানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। দ্বিতীয় হাসপাতালটি নির্মাণ শেষে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি থেকেই এর কার্যক্রম শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

টিটিএন/পিআর