স্বাস্থ্য

স্বাচিপের পরবর্তী সভাপতি ও মহাসচিব কারা?

দীর্ঘ এক যুগ পর আগামী ১৩ নভেম্বর স্বাচিপের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই সম্মেলনকে ঘিরে শীর্ষ দুটি পদে ছোট বড় বিভিন্ন নেতার নাম শোনা যাচ্ছে। তবে কে বা কারা হচ্ছেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এর পরবর্তী সভাপতি ও মহাসচিব? -এ নিয়ে চলছে আলোচনা।সভাপতি ও মহাসচিব পদে ভোটের মাধ্যমে না-কি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবে এ সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে এ দুটি পদে নির্বাচন করতে ইচ্ছুক যারা তারা বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে শুভেচ্ছা বিনিময় ও দোয়া চাইছেন। বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে তাদের অনুসারীরা প্রচারাভিযানও চালাচ্ছেন।তবে সকলেরই এক কথা- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দিবেন (ভোট কিংবা নির্বাচিত) সেটাই সকলেই মেনে নিবেন। স্বাচিপের সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। স্বাচিপের সভাপতি কিংবা মহাসচিব পদের জন্য এখনো কাউকে কোন গ্রীণ সিগন্যাল দেননি প্রধানমন্ত্রী।সর্বশেষ স্বাচিপের সম্মেলনের আগে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা (বর্তমান প্রধানমন্ত্রী) শেখ হাসিনা নিজেই সভাপতি পদে অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হককে সভাপতি হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন। ওই সময় মহাসচিব পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হয়েছিলেন বর্তমান বিএমএ মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান।অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত এক যুগে স্বাচিপের সদস্য সংখ্যা ১০ গুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৩ সালে স্বাচিপের সদস্য সংখ্যা মাত্র সাড়ে ১২শ’ থাকলেও বর্তমানে স্বাচিপের সদস্য সংখ্যা ১৩ হাজারেরও বেশি।স্বাচিপের সাধারণ সদস্যদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, তারা সকলেই নেত্রীর প্রতি অনুগত হলেও পেশাজীবী এই সংগঠনটির যোগ্য নেতৃত্ব বাছাইয়ের ক্ষেত্রে শীর্ষ দুটি পদসহ ১০১টি পদের সব কটিতেই সরাসরি নির্বাচনের পক্ষে। তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ ও ডিজিটাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের ঘোষণা দিয়েছেন। তাই স্বাচিপের ভবিষ্যত হাল যে বা যারা ধরবেন তাদের ডিজিটাল প্রযুক্তিবান্ধব ও দূরদর্শী হতে হবে।সভাপতি পদে বর্তমান বিএমএ ও স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক, সাবেক বিএমএ নেতা ও সংসদ সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বর্তমান মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান, হলিফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান ভূঁঁইয়া, বিএসএমএমইউ’র সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, বিএসএমএমইউ’র সাবেক ও বর্তমান দুই উপাচার্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত ও অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, বিএমএর ঢাকা মহানগরীর সভাপতি অধ্যাপক ডা. আবদুর রউফ সর্দার ও অধ্যাপক ডা. কাজী শাহিদুল ইসলামের নামও শোনা যাচ্ছে।অনেকের নাম আলোচনায় উঠে আসলেও নানা সমীকরণ শেষে এককালের ‘গুরু শিষ্যখ্যাত’  সাবেক বিএমএ নেতা ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও বর্তমান স্বাচিপ মহাসচিব ডা. ইকবাল আর্সলানের নামই বেশি শোনা যাচ্ছে। এ দুজনের পক্ষে-বিপক্ষে সিনিয়র জুনিয়র চিকিৎসকরা সাধারণ সদস্যদের কাছে তাদের অতীত ও বর্তমান সফলতা বিফলতা তুলে ধরছেন।ডা. জালালের অনুসারীরা বলছেন, নেতৃত্ব প্রদানে স্বাচিপের সভাপতি ও মহাসচিব সম্পূর্ণ ব্যর্থ। গত পাঁচ বছরে স্বাচিপের নির্বাহী কমিটির মাত্র দুটি বৈঠক হয়েছে। চার বছর পর একটি ২০১৪ সালের ২৬ এপ্রিল ও অন্যটি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়। ইকবাল বিরোধীরা বলছেন, নেতৃবৃন্দ জবাবদিহিতা দিতে ভয় পায় বলে ২০০৩ সালের পর মাত্র দুটি বৈঠক ডেকেছে।অপরদিকে ইকবালের অনুসারীদের দাবি, তিনি ডাক্তারদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সব কাজ সততার সঙ্গে করে গেছেন। নির্বাচন হলে তার জয় সুনিশ্চিত বলেও মন্তব্য করেন তারা। অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান বলেন, নেত্রীর (শেখ হাসিনা) প্রতি তিনি অনুগত। নেত্রী যাকে সভাপতি হিসেবে নির্বাচন করে দিবেন তাকেই মেনে নেব। পাশাপাশি নেত্রী নির্বাচন করতে বললে তিনি যে কারও সঙ্গে সভাপতি পদে নির্বাচন করতে প্রস্তুত বলেও জানান।তবে সম্প্রতি এ প্রতিবেদক মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি সভাপতি পদে নির্বাচন করবেন কি-না জানতে চাইলে পাল্টা প্রশ্ন করে তিনি বলেন, তিনি যে স্বাচিপের সভাপতি হতে কিংবা নির্বাচন করতে চাইছেন তা কে বলেছে?একইসঙ্গে সরাসরি কোন জবাব না দিয়ে তিনি বলেন, স্বাচিপ তার হাতে গড়া সংগঠন। এ সংগঠনের সার্বিক মঙ্গল চান। তিনি যাই করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় করবেন।মহাসচিব পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন-বিএমএ’র সাবেক মহাসচিব অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, বিএমএর যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মো. আবদুল আজিজ, স্বাচিপের যুগ্ম মহাসচিব ডা. জামালউদ্দিন চৌধুরী, বিএমএর সিলেট জেলার সহ-সভাপতি এহতেশামুল হক চৌধুরী, বিএমএর সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ূয়া, বিএমএর আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. আবুল হাশেম খান, বিএমএর কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম, স্বাচিপের বিএসএমএমইউ’র সভাপতি অধ্যাপক ডা. জাকারিয়া স্বপন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. আবু ইউসুফ ফকির ও মিটফোর্ড হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু।তবে তাদের কেউ কেউ যুগ্ম মহাসচিব কিংবা অন্য কোন সম্পাদক পদ পেতে মহাসচিব পদটি হাঁকছেন বলে জানা গেছে।স্বাচিপের সভাপতি মহাসচিব পদে কেমন নেতা চান এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. মনিলাল আইচ লিটুসহ একাধিক চিকিৎসক জাগো নিউজকে জানান, যে বা যারাই নেতৃত্বে আসতে চান তাদের সকলেই যেন পেশাদার, রাজনীতি মনস্ক, সৎ, শিক্ষিত ও তথ্যপ্রযুক্তিবান্ধব হন -এমনটাই তারা আশা করেন।# এক যুগ পর স্বাচিপ সম্মেলন : চলছে নানা সমীকরণ# স্বাচিপ চিকিৎসকদের কোনো ডোনেশন নেইনি : ডা. মোস্তফা জালাল# স্বাচিপ নির্বাচনে যে কারো সঙ্গে লড়াইয়ে প্রস্তুত : ইকবাল আর্সলানএমইউ/জেডএইচ/আরএস/এমএস

Advertisement