রাজধানীসহ দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে একজন চীনা নাগরিকসহ মোট তিনজন রোগী ভর্তি হন। তাদের মধ্যে খুলনা হাসপাতালে ১ জন, রাজধানীর গুলশানের বেসরকারি ইউনাইটেড হাসপাতালে ১ জন ও সর্বশেষ কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন ১ জন।
Advertisement
হাসপাতালে ভর্তি মোট তিনজন রোগীর মধ্যে দুজনের ইতোমধ্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় করোনাভাইরাস ধরা না পড়ায় তারা রিলিজ নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি রোগীটির জ্বর কমলেও তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তিনিও সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাবেন বলে আশা করছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের শীর্ষ দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।
সম্প্রতি চীনের করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় গত ২১ জানুয়ারি থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সকল যাত্রী, বিশেষ করে চীন থেকে প্রতিদিন চারটি ফ্লাইটে আসা যাত্রীদের থার্মাল স্ক্যানার ও হ্যান্ড স্ক্যানার (জ্বর পরিমাপক যন্ত্র) দিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকাল পর্যন্ত চীন ফেরত ৩ হাজার ৭৫৪ জন যাত্রীর স্ক্রিনিং সম্পন্ন হয়েছে।
Advertisement
প্রতিবেশী দেশ ভারতে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এরপর থেকে স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসক কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সবার মুখে প্রশ্ন- দেশের হাসপাতালে করোনাভাইরাস সন্দেহে হাসপাতালে মোট কতজন রোগী ভর্তি রয়েছেন? তারা কেমন আছেন? ভর্তি রোগীদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কতটুকু?
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের কাছে এমন প্রশ্ন করলে তিনি জানান, এখন পর্যন্ত একজন চীনা নাগরিকসহ চীন ফেরত মোট তিনজন রোগী জ্বর ও ঠান্ডায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তাদের মধ্যে রাজধানীতে দুজন ও খুলনা হাসপাতালে ১ জন ভর্তি হন। ইতোমধ্যে তিনজন রোগীর দুজন বাড়ি ফিরে গেছেন। তাদের নমুনা পরীক্ষায় নোভেল করোনাভাইরাসের উপস্থিতি মেলেনি।
শাহজালাল আন্তজার্তিক বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর সরকারি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে সকালে যে রোগী ভর্তি হন তিনি গত রাতে চীন থেকে ফিরেন। বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক্যানারে তার ১০৬ ডিগ্রি জ্বর ধরা পড়ে। তার স্বজনরা হাসপাতালে ভর্তি না করে বাড়ি নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। এ নিয়ে বিমানবন্দরে কর্মরত স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে ওই রোগীর স্বজনদের বাদানুবাদও হয়। পরে সকালে তাকে ভর্তি করে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা শুরু করা হয়।
স্বাস্থ্য মহাপরিচালক জানান, তার জ্বর ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে। তিনি এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো ও সুস্থ রয়েছেন। নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া গেলে তাকেও রিলিজ দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
Advertisement
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে ১৭০ জনের প্রাণহানি ও ৭ হাজার ৭১১ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
এমইউ/এমএসএইচ/এমকেএইচ