ইসলামি মূল্যবোধ ও জনদরদী কাজের জন্য ব্যাপক প্রশংসিত তুরস্কের রাষ্ট্রপতি এরদোয়ান। সম্প্রতি তার সরকার ধর্ষকের শাস্তিবিষয়ক বিতর্কিত একটি নতুন আইন প্রয়োগের বিষয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি। ধর্ষকের শাস্তিস্বরূপ গৃহীত নতুন প্রস্তাবিত আইনটি হলো-‘অপ্রাপ্তবয়স্ক কোনো মেয়েকে ধর্ষণের পর যদি ওই ধর্ষক তাকে বিয়ে করেন তাহলে আইন অনুযায়ী ধর্ষকের সাজা মওকুফ করা হবে।’
Advertisement
তুরস্কের ক্ষমতাসীন এরদোয়ান সরকারের আইনপ্রণেতারা দেশটির সংসদে ধর্ষকের শাস্তির নতুন আইনটি উত্থাপন করবেন।
ইতিমধ্যে তুরস্কে ধর্ষকের শাস্তিবিষয়ক নতুন এক আইন নিয়ে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। আইনটির বিষয়ে দেশটির মানবাধিকার এবং নারী অধিকার সংগঠনগুলো সরকারের তীব্র সমালোচনায় করেছে, তাতে যোগ হয়েছে এরদোগান বিরোধী বামপন্থী দল দ্য পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টিও।
তুরস্কের এরদোয়ান সরকার ভাবছে যে, ‘যারা না বুঝেই অপ্রাপ্তবয়স্কদের ধর্ষণ করেছে তাদেরকে বিয়ের সুযোগ দেয়া। যদি তারা ধর্ষিতাকে বিয়ে করতে রাজি হয় তবে ধর্ষক তার সাজা থেকে বেঁচে যাবে।
Advertisement
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, এরদোয়ান সরকার গৃহীত এ আইনের বাস্তবায়নের অর্থই হলো- ‘তুরস্কে ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধকে বৈধতা দেয়া’।
বির্তকিত এ আইনটি খুব শীঘ্রই তুরস্কের সংসদে উত্থাপন করবেন দেশটির আইনপ্রণেতারা। প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে-‘অপ্রাপ্তবয়স্ক কোনো মেয়েকে ধর্ষণের পর যদি ওই ধর্ষক তাকে বিয়ে করেন তাহলে আইন অনুযায়ী ধর্ষকের সাজা মওকুফ করা হবে।’
এদিকে তুরস্কের বামপন্থী বিরোধী দল দ্য পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এইচডিপি) প্রস্তাবিত ওই আইনের তীব্র সমালোচনা করে সরকারকে সতর্ক করেছে। তারা এ আইনের প্রতিবাদে বলেছেন-‘এই আইন তুরস্কে ‘বাল্যবিবাহ’ ও ধর্ষণকে বৈধতা দেবে। পাশাপাশি শিশুদের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন বেড়ে যাবে।
আইনটি সংসদে উত্থাপন হওয়ার আগেই দেশটির মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলো তুরস্ক সরকার ও এরদোয়ানের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
Advertisement
ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্টকে তুর্কি মানবাধিকারকর্মী সুয়াদ আবু দায়েহ বলেন, ‘আইনটি বৈষম্যমূলক, যা নারীদের সুরক্ষার জন্য বিশাল এক আঘাত। আইনটি যেন সংসদে না উত্থাপিত হতে পারে সে দাবিতে আন্দোলন-বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়া উচিত।’
অন্যান্য মানবাধিকারকর্মীদের ভাষ্য, অপ্রাপ্তবয়স্ক যে নারী যার হাতে নিপীড়িত হলো, তাকে (অপরাধীকে) ওই ধর্ষিতা কি করে স্বামী হিসেবে মেনে নেবে? এ কেমন আইন!
যেসব পুরুষ জেনেশুনেই ধর্ষণ করেছে তাদেরকেও এই আইনের আওতায় ক্ষমা করা হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
উল্লেখ্য যে, ‘মানবাধিকার সংগঠন, কর্মী ও বিরোধীদের তোপের মুখেও প্রেসিডেন্ট এরদোগানের ক্ষমতাসীন দল এ কে পার্টির আইনপ্রণেতারা প্রস্তাবিত এই আইনটিতে দীর্ঘদিন ধরে সমর্থন জানিয়ে আসছেন। তারা কারো কথাই আমলে নিচ্ছে না।
এমএমএস/জেআইএম