চীনে সাময়িক সময়ের জন্য সব অফিস বন্ধ করে দিচ্ছে মার্কিন বহুজাতিক প্রযুক্তি কোম্পানি গুগল। চীনে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় প্রতিষ্ঠানটি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
Advertisement
চীনের মূল ভূখণ্ড, হংকং এবং তাইওয়ানে অবস্থিত গুগলের সব অফিস বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। শুধু গুগল নয় আরও অনেক প্রতিষ্ঠানই চীনে তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে আনছে বা সাময়িক সময়ের জন্য সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে।
এর আগে চীনে একটি স্টোর বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক প্রযুক্তি সংস্থা অ্যাপল। একই সঙ্গে চীন ভ্রমণের ক্ষেত্রেও সতর্ক করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
অ্যাপল জানিয়েছে, চীনে তাদের ভোক্তা সংখ্যা কমে গেছে। লোকজন এখন বাড়ির বাইরে বের হচ্ছে না। এছাড়া কর্মীদের এই ভাইরাসে আক্রান্তের সম্ভাবনা থাকায় তারা স্টোর বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে ভ্রমণের ক্ষেত্রেও সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে।
Advertisement
উহান এবং চীনের অন্যান্য শহরে যেখানে নিজেদের কর্মীরা রয়েছে তাদের মধ্যে কেয়ার কিট সরবরাহ করছে অ্যাপল।
অপরদিকে, অপ্রয়োজনে চীন ভ্রমণে কর্মীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। প্রতিষ্ঠানটির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, নিজেদের কর্মীদের ভাইরাসের প্রকোপ থেকে রক্ষা করতে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে যেসব কর্মী বর্তমানে চীনে অবস্থান করছেন তাদের বাড়িতে বসেই কাজ করতে বলেছে ফেসবুক। প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র বলেন, আমাদের কর্মীদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে আমরা এই পদক্ষেপ নিয়েছি।
এই ভাইরাস বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। কারণ এ বিষয়ে এখনও ভালোভাবে জানা সম্ভব হয়নি। বিশেষ করে এ ভাইরাস কতটা বিপজ্জনক এবং এটা একজন থেকে আরেকজনের শরীরে কীভাবে ছড়িয়ে পড়ছে এ বিষয়গুলো এখনও পরিষ্কার নয়।
Advertisement
এখন পর্যন্ত এটা জানা সম্ভব হয়েছে যে, এ ভাইরাস থেকে নিউমোনিয়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই এটা অনেক ভয়াবহ হতে পারে। অপরদিকে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ক্ষমতা আরও প্রবল হচ্ছে এবং সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন।
চীনে এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে ১৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার নিশ্চিত করেছে দেশটির সরকার। এছাড়া আরও এক হাজার ৭শ জন নতুন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
হুবেই প্রদেশে আরও ৩৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। অপরদিকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সিচুয়ান প্রদেশে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ন্যাশনাল হেলথ কমিশন। সংস্থাটি জানিয়েছে, প্রথমবারের মতো তিব্বতে একজন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ কী?
এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শুরুতে জ্বর ও শুষ্ক কাশি হতে পারে। এর সপ্তাহখানেক পর শ্বাসকষ্টও দেখা দেয়। অনেক সময় নিউমোনিয়াও হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা লাগে। তবে এসব লক্ষণ মূলত রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরই জানা গেছে।
সেক্ষেত্রে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার একদম প্রাথমিক লক্ষণ কী বা আদৌ তা বোঝা যায় কি-না তা এখনও অজানা। তবে নতুন এই করোনাভাইরাস যথেষ্ট বিপজ্জনক। সাধারণ ঠান্ডা-জ্বরের লক্ষণ থেকে এটি মৃত্যুর দুয়ার পর্যন্তও নিয়ে যেতে পারে।
টিটিএন/জেআইএম