উহানের প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ এবং এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ চীনগামী বিমানের ফ্লাইট বাতিল করছে। এর মধ্যে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স, এয়ার এশিয়া, ক্যাথে প্যাসিফিক, এয়ার ইন্ডিয়া ও ফিনএয়ার ইতোমধ্যে চীনগামী বিমানের সংখ্যা কমিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে।
Advertisement
অন্যদিকে যেসব যাত্রী চীনে যাওয়ার জন্য বিমানের টিকেট কিনেছিলেন তাদের টাকা ফেরত দিচ্ছে অন্যান্য বিমানসংস্থাগুলো। বুধবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিস্তার অব্যাহত থাকায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিমানসংস্থাগুলো ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে।
গত ৩১ ডিসেম্বর উহানে এই ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যাওয়ার পর এখন পর্যন্ত চীনে ১৩২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। বর্তমানে উহানের সীমানা পেরিয়ে এই ভাইরাস রাজধানী বেইজিং, সাংহাই, ম্যাকাও ও হংকংয়ের বাইরে বিশ্বের ১৯টি দেশে ছড়িয়েছে।
প্রয়োজন ছাড়া অন্য যেকোনও ধরনের ভ্রমণ বাতিল করতে বুধবার ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্দেশনা জারি করায় চীন এবং ব্রিটেনের মধ্যে সব ধরনের ফ্লাইট চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স গ্রুপের মালিকানাধীন ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ। তারা বলছে, খুব শিগগিরই এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে।
Advertisement
ব্রিটিশ এই এয়ারওয়েজের দুটি ফ্লাইট প্রতিদিন সরাসরি লন্ডন থেকে চীনের বেইজিং এবং লন্ডন থেকে সাংহাই চলাচল করে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের সব ফ্লাইট বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স গ্রুপ। একই দিনে চীনের তিনটি শহরে চলাচলকারী বিমানের ফ্লাইট বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন বিমান সংস্থা ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স। যাত্রীসঙ্কট তৈরি হওয়ায় আগামী ১ থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনগামী বিমানের ফ্লাইট বন্ধের এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স।
হংকংয়ের স্থানীয় সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ক্যাথে প্যাসিফিকসহ অন্তত চারটি বিমানসংস্থার বিমান চীনের ২৪টি গন্তব্যে সপ্তাহে ৪৮০টি ফ্লাইট পরিচালনা করলেও করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত এই সংখ্যা বর্তমানে ২৪০ এ নামিয়ে আনা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত বিমান চলাচলের এই সংখ্যা অপরিবর্তিত থাকবে।
কানাডার বিমানসংস্থা এয়ার কানাডা দেশটি থেকে সপ্তাহে অন্তত ৩৩টি ফ্লাইট পরিচালনা করতো। যাত্রীর টিকেট চাহিদা কমে আসায় এয়ার কানাডাও চীনে চলাচলকারী কয়েকটি ফ্লাইট বাতিল করেছে। থাইল্যান্ড এবং মালয়েশিয়া থেকে চীনের উহানে যাত্রী সেবাদানকারী এয়ার এশিয়া আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাদের সব ফ্লাইট বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে।
ভারতের বিমান পরিবহন সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া এক টুইট বার্তায় বলছে, দিল্লি হয়ে সাংহাই এবং মুম্বাইয়ের মধ্যে চলাচলকারী বিমানের ফ্লাইট আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। ফিনল্যান্ডের ফিন এয়ার হেলসিংকি থেকে বেইজিংয়ে চলাচলকারী তাদের তিনটি ফ্লাইট আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩৯ মার্চ পর্যন্ত বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে। তবে মধ্যপ্রাচ্যের কাতার এয়ারওয়েজ এবং মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স তাদের চীনগামী কোনও বিমানের ফ্লাইট বাতিল করেনি।
Advertisement
এসআইএস/পিআর