একুশে বইমেলা

সবচেয়ে বড় বইমেলা হবে এবার

ঐতিহ্যবাহী অমর একুশে বইমেলার আয়োজনের প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে। আর মাত্র তিনদিন পর উদ্ধোধন হবে এই বইমেলা। তবে এবারের বইমেলা পূর্বের সকল বইমেলার রেকর্ড ছাড়িয়ে যাচ্ছে।

Advertisement

গতবারের বইমেলা থেকে এবারের বইমেলার স্টল ও পরিধি প্রায় ৩০ ভাগের মতো বেড়েছে। এই আয়োজন নিয়ে পাঠক এবং প্রকাশকের উভয়েই সন্তোষ প্রকাশ করেছে।

‘অমর একুশে বইমেলা ২০২০’ আগামী দুই ফেব্রুয়ারি শুরু হচ্ছে। প্রতিবছর পহেলা ফেব্রুয়ারিতে শুরু হলেও এবার ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের জন্য একদিন পেছানো হয়েছে। তবে একদিন পেছানো হলেও বইমেলা ফেব্রুয়ারির মধ্যেই সমাপ্ত করবে বলে জানিয়েছে বাংলা একাডেমি।

বইমেলার সামগ্রিক প্রস্তুতি আজকের মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছে বইমেলার আয়োজক বাংলা একাডেমি। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সরেজমিন বইমেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, সেই নির্দেশনা মানতেই প্রকাশকরা তাদের স্টলের সকল কাজ আজকের মধ্যে শেষ করার তোড়জোড় প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ কেউ করাত দিয়ে কাঠ কেটে জোড়া লাগাচ্ছেন, কেউ আবার রঙ করছেন। আয়োজক কমিটি শ্রমিক দিয়ে বইমেলার ভেতরে চলাফেরার জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আলাদা রাস্তা করাচ্ছে। বৃষ্টি মোকাবিলায় স্টলের ওপরে টিন ও ত্রিপল লাগাচ্ছেন। সবমিলিয়ে ব্যস্ততম সময় পার করছেন বইমেলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।

Advertisement

বইমেলার সামগ্রিক আয়োজন নিয়ে বাংলা একাডেমির বইমেলা আয়োজনের সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘এবার বইমেলা আগের চেয়ে বড় আকারে হচ্ছে। গতবছর ৪১৯টি স্টল ছিল, এবার তা বেড়ে ৫৫৩টি হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জায়গাও বাড়ানো হয়েছে। এবারের বইমেলায় নতুন নতুন প্রকাশক আসছে। নতুন প্রকাশক আসাতে নতুন পাঠকও বাড়বে।’

নিরাপত্তা ও যান চলাচলে মেট্রোরেলের কাজ কোনো বাধা হতে পারে কি না-এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেলের জন্য কোনো সমস্যা হবে না। নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, র‍্যাবসহ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সবসময় টহলে থাকবে। দেখাশোনা করবে। যানচলাচলের বিষয়টি ট্রাফিক পুলিশরা দেখবে।’

তবে স্টল ও প্রকাশনা বাড়ায় পুরাতন প্রকাশকদের অনেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানান। কয়েকজন প্রকাশক তাদের বই বিক্রিতে একটু সমস্যা হবে বলে মনে করেন। তবে বেশিরভাগ প্রকাশকই প্রকাশনা বৃদ্ধি পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

সপ্তবর্ণা নামের একটি প্রকাশনার প্রকাশক শিখা শিকদার জাগো নিউজকে বলেন, বইমেলায় প্রকাশনা বাড়ায় পাঠকদের বিভিন্নভাবে আকৃষ্ট করতে হবে। পাঠকের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক করতে হবে। এক্ষেত্রে ভালো বই প্রাধান্য পাবে।

Advertisement

কবিতাচর্চার প্রকাশক বদরুল হায়দার চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, প্রকাশনা বাড়ায় আমরা আনন্দিত। তিনি বলেন, বইমেলা বইপ্রেমিকদের মিলনমেলা। এখানে যত প্রকাশনা আসবে তত পাঠক আসবে। বই পড়ার প্রতি মানুষের প্রেম জন্মাবে। ভালোবাসা বৃদ্ধি পাবে। আর বইমেলা ব্যবসায়িক কোনো লাভজনক কাজ নয়। ভালো সময় কাটাতে শখ থেকে বইমেলার আয়োজন করে থাকি।

হাবিবুল বাশার নামে এক অশীতিপর পাঠক জানান, বইমেলা এলেই আমার কেমন যেন অন্যরকম একটা ভালোলাগা কাজ করে। বইমেলায় আসতে, বই পড়তে এবং পড়াতে ভালো লাগে। তিনি বলেন, বইমেলা যত বড় হবে পাঠক তত বৃদ্ধি পাবে। এর মাধ্যমে ভালো বই পড়ার আন্দোলন শুরু হবে।

‘বর্তমানে কোনো বই সমাজ পরিবর্তনে ও সামাজিক আন্দোলন তৈরি করতে পারেনি। লেখকদের উচিত চামচামি বাদ দিয়ে সমাজের জন্য ভালো কিছু তোলে আনান। সমাজের অন্ধকার নিমজ্জিত মানুষকে আলোর পথে নিয়ে আসতে বাস্তবিক সমাধান ও পরিকল্পনা নিয়ে লেখা উচিত তাদের’-যোগ করেন এই বইপ্রেমিক।

আল-সাদী ভূঁইয়া/এসআর/এমএস