জাতীয়

রাস্তায় ‘ডিবি’ ‘সিআইডি’সেজে মালামাল লুট করা তাদের পেশা

ডিবি পুলিশ পরিচয়ে আমদানিকৃত আড়াই কোটি টাকার ওষুধের কাঁচামাল লুটের ঘটনায় তিন ডাকাতকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে রাজধানীর কলাবাগান ও রাজশাহীর রাজপাড়া এলাকা থেকে প্রতারকচক্রের এই তিন সদস্যকে আটক করা হয়। র‌্যাব জানিয়েছে, রাস্তায় ডিবি, সিআইডি সেজে মানুষকে ধোঁকা দিয়ে মালামাল লুট করতেন তারা।

Advertisement

আটকরা হলেন-অপু রোজারিও (৬০), রুহুল আমিন (৩৫) ও জামাল হোসেন (৩২)। র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানায় র‌্যাব।

র‍্যাব-৪-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক বলেন, সড়কে ওষুধের মূল্যবান কাঁচামাল টার্গেট করে ডাকাতি করে আসছিল চক্রটি। এসব কাঁচামাল পরিবহনের তথ্য কার্গোর কেউ কিংবা কোম্পানির সংশ্লিষ্ট কেউ তাদেরকে সরবরাহ করতেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কে বা কারা তাদেরকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করতেন এবং ডাকাতি হওয়া এসব কাঁচামাল কোথায় বিক্রি হতো তা পরবর্তী তদন্তে বেরিয়ে আসবে বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

Advertisement

র‍্যাব অধিনায়ক জানান, গত ১৪ জানুয়ারি বিদেশ থেকে আমদানিকৃত ওষুধের কাঁচামাল হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালের কাভার্ডভ্যানে গাজীপুরে নেয়া হচ্ছিল। রাত সাড়ে নয়টার দিকে কালিয়াকৈর এলাকায় রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে কয়েকজন নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৬৯ ড্রাম কাঁচামাল লুট করে নিয়ে যায়। লুট হওয়া সেসব কাঁচামালের মূল্য প্রায় ২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।

এ ঘটনায় ১৫ জানুয়ারি কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার ছায়াতদন্ত শুরু করে র‌্যাব।

এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কলাবাগান ধানার পশ্চিম রাজাবাজার এলাকা থেকে সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের মূল হোতা অপু রোজারিওকে আটক করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার ভোরে রাজশাহী থেকে রুহুল আমিন ও জামাল হোসেনকে আটক করা হয়।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ৬০ ড্রাম ওষুধের কাঁচামাল জব্দ করা হয। এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি কালিয়াকৈর থানা পুলিশ এই ডাকাত দলের আরও ৬ সদস্যকে গ্রেফতারসহ ২০৯ ড্রাম কাঁচামাল উদ্ধার করে।

Advertisement

র‍্যাব অধিনায়ক বলেন, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ, ডিবি, সিআইডি পরিচয়ে মহাসড়কে ডাকাতি করে আসছিল। ডাকাতির সময় তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মতো হ্যান্ডকাপ, ওয়াকিটকি সেট ও রিফ্লেকটিং জ্যাকেট ব্যবহার করতেন। এ চক্রের মূলহোতা অপু রোজারিও।

অপু ছাড়াও তার দলে আরও ১০-১২ জন সদস্য আছে বলে জানান র‌্যাব অধিনায়ক মো. মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, ‘অপু তার দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড ছাড়া কারও সঙ্গে কথা বলতেন না। ডাকাতি কার্যক্রমের সকল পরিকল্পনা সম্পন্ন করে তার দলের সেকেন্ড ইন কমান্ডের মাধ্যমে অন্য সদস্যদের জানাতেন। তার নির্দেশ মোতাবেক নির্দিষ্ট তারিখ ও সময়ে নির্দিষ্ট স্থানে উপস্থিত হয়ে ডাকাতি সম্পন্ন করা হতো।’

তিনি আরও বলেন, ‘আটকরা স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালের ওষুধের কাঁচামাল ডাকাতির বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এছাড়াও ২০১৮ সালের ৯ আগস্ট জেনারেল ফার্মাসিউটিক্যালের কাঁচামালসহ বিভিন্ন কোম্পানির ওষুধের কাঁচামাল ডাকাতির বিষয়টি স্বীকার করেছেন।’

এআর/এসআর/পিআর