করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় এইডসের ওষুধ ব্যবহার করছে চীন। বেইজিং কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে, শহরের বেশ কিছু হাসপাতালে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় এইডসের ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে। এই মরণঘাতী ভাইরাসের কারণে যে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা বন্ধ করার চেষ্টা হিসেবেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
Advertisement
মূলত চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে গত বছরের ডিসেম্বরে প্রথম এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। সামুদ্রিক খাবারের একটি বাজার থেকেই এই ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে বলে ধারণা করা হয়। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ১৩২ জন মারা গেছে। আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ছয় হাজার মানুষ।
চীনের গণমাধ্যম সিনহুয়ায় এক বিশেষজ্ঞের বরাতে বলা হয়েছে, আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ আকার ধারণ করতে পারে। চীন ছাড়াও ১৮ টি দেশের ৭৮ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
বেইজিংয়ের পৌরসভা স্বাস্থ্য কমিশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অনলাইনে একটি গুজব ছড়িয়েছে যে, করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় একটি অ্যান্টি এইডস ড্রাগ ব্যবহার করা হচ্ছে এবং এটা করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে কার্যকর হচ্ছে বলে প্রমাণিত হয়েছে।
Advertisement
ন্যাশনাল হেলথ কমিশন ওই গুজবকে সমর্থন জানিয়ে বলছে, বেইজিংয়ে তাদের কাছে লোপিনাভির/রিটোনাভির রয়েছে। বেইজিংয়ের তিনটি হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা চলছে। সেখানে এসব ওষুধ ব্যবহার করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এই দু'টি ওষুধ অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল, যা সুস্থ্য কোষের সমন্বয়ে এইচআইভি প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায় এবং নতুন কোষ তৈরি করে।
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর থেকে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১৩২ জন, আক্রান্ত প্রায় ছয় হাজার।
চীন ছাড়াও ১৮টি দেশের অন্তত ৭৮ জন এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। চীনা গণমাধ্যম সিনহুয়ায় এক বিশেষজ্ঞের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ আকার ধারণ করতে পারে।
থাইল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, ভারত, মালয়েশিয়া, নেপাল, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানি, কম্বোডিয়া, শ্রীলঙ্কা এবং তাইওয়ানে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া ইসরায়েলেও এক রোগীর শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
Advertisement
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নতুন এ ভাইরাসের নাম দিয়েছে ২০১৯ নভেল করোনাভাইরাস। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে চীনে সফর করেছেন এমন লোকজনের মাধ্যমেই এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। সে কারণে অনেক দেশই এ ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে চীন সফরে নাগরিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
এদিকে, প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে গবেষণাগারে করোনাভাইরাস তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। একে করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কারের পথে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন তারা।
টিটিএন/এমকেএইচ